যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার নিষ্পত্তি করতে ৩০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছে গুগল। অভিযোগ ছিল, ইউটিউব শিশুদের তথ্য অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া সংগ্রহ করে তা ব্যবহার করে লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন দেখিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে ক্যালিফোর্নিয়ার সান হোসে ফেডারেল কোর্টে প্রাথমিক সমঝোতা চুক্তি দাখিল করা হয়। এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার জন্য মার্কিন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক সুসান ভ্যান কিউলেনের অনুমোদন প্রয়োজন।
সমঝোতায় রাজি হলেও, গুগল কোনো ধরনের ভুল করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এর আগেও ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) এবং নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের তদন্তে শিশুদের তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে গুগলকে ১৭০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল। সে সময়ের চুক্তিকে অনেক সমালোচক খুবই নমনীয় বলে অভিহিত করেছিলেন।
সর্বশেষ মামলায় ৩৪ জন শিশুর অভিভাবক অভিযোগ করেন, কার্টুন, নার্সারি রাইমসহ শিশুতোষ কনটেন্টের মাধ্যমে শিশুদের আকৃষ্ট করে ইউটিউব তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে, এমনকি ২০১৯ সালের নিষ্পত্তির পরও এ ধরনের কার্যক্রম চালু ছিল।
তবে এ মামলায় কনটেন্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো—যেমন হ্যাসব্রো, ম্যাটেল, কার্টুন নেটওয়ার্ক ও ড্রিমওয়ার্কস অ্যানিমেশন—এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিচারক সেগুলো খারিজ করে দেন।
এর পরপরই ফেব্রুয়ারিতে মধ্যস্থতা শুরু হয় এবং তা থেকে সমঝোতার পথে আসে মামলাটি। প্রস্তাবিত শ্রেণিমামলার আওতায় ২০১৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৩ বছরের নিচের যেসব শিশু ইউটিউব দেখেছে, তারা ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ভুক্তভোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ হতে পারে। এর মধ্যে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ আবেদন করলেও প্রত্যেককে গড়ে ৩০ থেকে ৬০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ মিলতে পারে, আইনজীবী ফি বাদ দিয়ে।
আইনজীবীরা এই সমঝোতা থেকে ৯ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ফি দাবি করার পরিকল্পনা করছেন।
অন্যদিকে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে অ্যালফাবেট (গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান) ১৮৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার আয়ের বিপরীতে ৬ দশমিক৭ বিলিয়ন ডলার নিট মুনাফা করেছে।