জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে অভিহিত করা অমর্যাদাকর ছিল। বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা একটি সংবাদ সম্মেলনে আসেন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি আন্দোলনকারীদের পক্ষ নেবেন। কিন্তু তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি অভিহিত করে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। মূলত এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের একটি বৈধতা প্রদান করা হয়।’
‘কারণ, তারা সব সময় দেখেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ন্যায্য আন্দোলন করা হলে তাদের রাজাকারের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে আন্দোলনের ন্যায্যতা নস্যাৎ করা হতো। শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি বলে ট্যাগ দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেন। সেই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।’
তিনি বলেন, ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পর আন্দোলনকারীদের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারের সঙ্গে আপস না করলে দমন-পীড়ন আরও বাড়বে। তবে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘১৮ জুলাই কমপ্লিট শাটডাউনের ডাক দেওয়ার পর সারাদেশে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসেন। বিশেষ করে মাদরাসা ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারি সন্ত্রাসীরা নির্বিচার গুলি চালায়, ফলে বহু মানুষ নিহত ও আহত হন। নাহিদ ইসলাম তৎকালীন সরকারকে ফ্যাসিবাদী হিসেবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘তারা তিনবার নির্বাচনে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করেছে।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, সরকার প্রকৃতপক্ষে কোটা সংস্কার কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বাতিল করতে চায়নি; বরং সময়মতো তা পুনর্বহাল করার পরিকল্পনা ছিল, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর বাস্তবায়িত হয়।
এমএ//