সুদানের (আবেই) অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের ভয়াবহ হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৩০) রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেসওয়েটার পদে কর্মরত ছিলেন। তার ব্যক্তিগত নং: (সিএস-২২০১০৯)। গত ৭ নভেম্বর তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে যোগ দেন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় সুদানের ঘটনায় হতাহতদের নাম পরিচয় প্রকাশ করে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন মেঝ ছেলে। তার বড় ভাই মো. মোস্তফা প্রবাসী এবং ছোট ভাই মো. শাহিন মিয়া বাড়িতে কৃষিকাজ করেন।
স্ত্রী আর তিন বছরের একমাত্র ছেলে ইরফানকে রেখে দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ির উঠোনজুড়ে এখন শুধু কান্না আর হাহাকার। বাবার আদর কী, তা বোঝার আগেই চিরতরে পিতৃহারা হলো ছোট্ট ইরফান।
প্রায় এগারো বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।
নিহতের চাচাতো ভাই হানিফ মিয়া বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাইয়ের মত মানুষই হয় না। সে খুবই ভালো মানুষ ছিলেন সবকিছু আমাদের সাথে পরামর্শ করতেন। গতকাল রাতে আমরা যখন শুনতে পারি ওই শান্তিরক্ষী মিশনে বিমান ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে এরপর আমার ভাইয়ের সাথের একজনের সাথে যোগাযোগ করে আমরা বিষয়টি জানতে পারি’।
নিহতের বাবা হযরত আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘এক মাস আগে আমার বাবা গেছে মিশনে। সে যাওয়ার সময় বলেছে তার ছেলে কে দেখে শুনে রাখি। আর আমাকে বলেছে কাজ কাম কম করতে যেহেতু আমি অসুস্থ মানুষ সে দেশে এসে আমাকে টাকা দিবে এবং যাওয়া সময় সে টাকা দিয়ে গেছে। আমার বাবা নেই বলে কাঁদতে থাকেন’।
নিহতের ফুফাতো ভাই হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ সুরুজ মিয়া বলেন, গতকাল মিডিয়ার মাধ্যমে এমন হামলার ঘটনা জানতে পেরে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। এর কিছুক্ষণ পরেই তার সাথের একজন ফোন দিয়ে মৃত্যুর ঘটনা জানায়। আসলে এমন মৃত্যু মেনে নেওয়ার মতো নয় তবে দেশে হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দেওয়া গর্বের।
পাকুন্দিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপম দাস বলেন, ‘আমি ঘটনার শোনার পরই পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করছি’।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আই/এ
