বিশ্বে গেল সপ্তাহে যত মানুষ নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকই ভারত থেকে। এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুধু তাই নয় গেল সপ্তাহে বিশ্বে মোট মৃত্যুর চার ভাগের এক ভাগই হয়েছে ভারতে।
গতকাল বুধবার করোনা মহামারিসংক্রান্ত প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গেল সপ্তাহে বিশ্বের মোট করোনা আক্রান্তের ৪৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর ২৫ শতাংশ ভারত থেকে হয়েছে।
অবশ্য ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর এপ্রিলের শুরু থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গেল কয়েক সপ্তাহে তা চরমে পৌঁছেছে।
গেল দুই সপ্তাহ ধরে ভারতে প্রতিদিন সংক্রমিত রয়েছে তিন লাখের বেশি। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের ওপর থাকা যুক্তরাষ্ট্র এবং নিচের অবস্থানের ব্রাজিলেও প্রতিদিন আক্রান্ত থাকছে এক লাখের অনেক কম। এই পরিস্থিতিতে করোনার অধিকাংশই হচ্ছে ভারতে।
ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে দুই কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছে দুই লাখ ৩০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে গেল ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে চার লাখ ১২ হাজার ৬১৮ এবং মারা গেছে তিন হাজার ৯৮২ জন।
ভারতে সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবার করুণ চিত্র ফুটে উঠছে সবখানে। গেল কয়েক সপ্তাহে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর পাশাপাশি কোভিড রোগীদের শয্যা না পাওয়া, করোনা পরীক্ষা করতে দীর্ঘ অপেক্ষার খবর উঠে এসেছে বারবার। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার অভাবের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভারত সরকারের সমালোচনা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কারফিউ, লকডাউন জারি করে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে উদ্যত হলেও কেন্দ্র থেকে এখনও তেমন কোনও পদক্ষেপ কেন করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সভা নিয়ে নীরবতার জন্য দেশে-বিদেশে সমালোচিত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
করোনার জেরে যেমন মৃত্যু হচ্ছে তেমন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসছে। এটি ভারতের প্রতিদিনের মৃত্যুকে লাগামছাড়া পর্যায়ে নিয়ে গেছে। মহামারির জেরে মোট যতো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে গেল বছর এর অর্ধেকও হয়নি। এর মধ্যে চলছে টিকাকরণ। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ না হওয়ারও অভিযোগ আছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, গেল এক সপ্তাহে দেশে আগের তুলনায় অনেক কম টিকাকরণ হয়েছে।
এসএন
