মৃত্যু ও শনাক্তের হারে রাজশাহী এখন করোনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে। বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু। সবচেয়ে বেশী ঝুঁকি রাজশাহীর পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে। একারনে এক সপ্তাহ লক ডাউনের পর আজ থেকে আরো এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এরপরও সেখানকার মানুষ অবাধে চলাচল করছে। একারনে ঝুঁকিতে আছে রাজশাহী জেলাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজশাহীতে কঠোর লকডাউনের দাবী জানিয়েছে সাধারণ মানুষ ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার রাজশাহীতে ১২জনের মৃত্যু হয়েছে । জেলায় একদিনে এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যু হার। গত এক সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে মোট ৬৫ জন করোনা রোগী। তাদের মধ্যে বেশীরভাগই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা।
রাজশাহীতে ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৭শ’১২ জন। এমন অবস্থায় রাজশাহীর মানুষ আতঙ্কিত। বিশেষ করে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত হওয়ায় বেশী আতঙ্কিত সচেতন নগরবাসী।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহীর পথে দুটি স্থানে চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। এসব চেকপোষ্টে তথ্য গোপন করে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ চলাচল করছে স্থানীয়রা। অনেকে করোনা রোগীই তথ্য গোপন করে আত্মগোপনে আছে। রাজশাহীর প্রবেশদার কাশিয়াডাঙ্গার মোড়ে চেকপোষ্ট তদারকী কর্মকর্তা রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মনির হোসেন বলেছেন, জাতীয় পরিচয় পত্র শনাক্তের ব্যবস্থা করা হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে আসা লোকজন চিহ্নিত করা সহজ হবে।
এদিকে করোনার কারনে সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এরপরও সীমান্ত পথে ভারত থেকে অবৈধভাবে লোকজন রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবেশ করছে।
অপরদিকে গত ঈদের আগে যে ৪২ জনের নমুনা জেনম টেস্টের জন্য ঢাকার আইইডিসিআর এর করোনা পরীক্ষা ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল তাদের মধ্যে ৭ জনের নমুনায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। বর্তমানে এই সাতজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। তারা কোথায় আছে? কিভাবে আছে জানেনা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তৃপক্ষও। তবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানিয়েছেন, এসব রোগীর সন্ধান করা হচ্ছে।
এদিকে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার জানিয়েছেন, করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে গেলেও কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়নি। আর জেলা প্রশাসন বলছে, কঠোর লকডাউনের মত অবস্থা এখনো রাজশাহীতে হয়নি।