দীর্ঘ ১০ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল। ইতোমধ্যে কমিটির প্রায় ৪২ সদস্যকে না জানিয়ে সম্মেলন করার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে মামা-ভাগ্নে গ্রুপ।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়। অন্যদিকে উপজেলাতে একই দিনে দুটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। আর এসব কারণে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দুই গ্রুপই বলছে কেন্দ্রের নির্দেশনায় তারা কাউন্সিল করছেন।
জানা গেছে, ২০১২ সালে তিন বছরের জন্য দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। মিজানুর রহমান মণ্ডল সভাপতি এবং খায়রুল আলম রাজু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির ইতোমধ্যে ১১ নেতাই মারা গেছেন।
দীর্ঘ ১০ বছর পর বুধবার (৯ নভেম্বর) হতে যাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল। কাউন্সিলকে ঘিরে দুটি পক্ষ পাল্টাপাল্টি সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিয়েছে। দুইভাগে বিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটির ৪২ সদস্য এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু। অন্যদিকে কমিটির স্বল্পসংখ্যক সদস্য নিয়ে নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ কবির।
এতোদিন প্রকাশ্যে কোনো দ্বন্দ দেখা না গেলেও কাউন্সিলকে ঘিরে উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের (মিজান-রাজু) বিভক্তি ও কোন্দল প্রকাশ্যে আসছে। ফলে আগামী বুধবার (৯ নভেম্বর) কাউন্সিলে শেষ পর্যন্ত কী হয়, সর্বত্র এখন সেই আলোচনা চলছে।
কাউন্সিলকে ঘিরে সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম রাজু জানান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় বিরামপুর পাইলট মাঠে কাউন্সিলের মঞ্চ তৈরি ও অন্যান্য প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। অন্য দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মণ্ডল ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ কবির বাড়ি ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ২নং রাইস মিলে কাউন্সিলকে ঘিরে মঞ্চও তৈরি করছেন। দুই গ্রুপই বলছে কেন্দ্রের নির্দেশনায় তারা কাউন্সিল করছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম রাজু বলেন, বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মণ্ডল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পারভেজ কবির পদ-পদবী নিয়ে দলের কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন না, আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিককে সঙ্গে নিয়ে সকল জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছি। বিরামপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন একটি উৎসবে পরিণত হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে ২নং রাইস মিলে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সম্মেলন বিষয়ে কমিটির সকলেই অবগত আছেন। যদি কোন পক্ষ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে, তাহলে সেই দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।
এ সময় দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, আওয়ামী লীগের রংপুরের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক ভাইয়ের কথা মতো বিরামপুর পাইলট বড় মাঠে কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল করে সুন্দর একটি কমিটি উপহার দিতে পারবো।