কারো ব্যক্তিগত জমি চাষ না করলেই তা খাস করা হবে-এটি সম্পূর্ণ গুজব। এমন কোনো নিয়ম বা পদ্ধতি নেই। বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় একটা বড় গুজব চলছে যে, যেসব জমিতে চাষ করা হবে না সেগুলো খাস হয়ে যাবে। গতকাল অনুষ্ঠিত কমিশনারদের সভায় কৃষি অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভূমি সচিব উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমরা ক্লিয়ার ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিয়েছি কারো জমি চাষ করলো না, আর আমি খাস করবো, এ রকম কোনো পদ্ধতি নেই। খাস করার একটা আলাদা পদ্ধতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য সংকট এবং চীনের উৎপাদন কমে যাওয়াসহ তিনটি প্রধান কারণে ২০২৩ সাল সংকটময় হতে পারে। এজন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাওয়াসহ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে খাদ্য সংকট থেকে যাবে। যে কারণে সবার আগে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত পাঁচ-ছয় মাসে আমরা খাদ্য সংকট দেখেছি। আগামী এক থেকে তিন বছরের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। পর্যাপ্ত বীজ উৎপাদনেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সচিব বলেন, কক কোনো পাকিস্তানি মুরগি না, এটা জয়পুরহাটে ডেভেলপ করা। আমাদের বিজ্ঞানীরাই এটা বানিয়েছেন। তারা এ মুরগির নাম দিয়েছেন ‘সোনালী’। এটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পাওয়ার মতো কাজ তারা করেছেন। এভাবে বৈজ্ঞানিক উপায়গুলো ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠালে তারা উচ্চ বেতনে কাজ পাবেন। এ জন্য শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। রেমিট্যান্স বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ফি দিতে হবে না। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি পরিষ্কারও করেছে। এছাড়া নাম ও পরিচয়পত্র দিয়েই কেবল রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় আগামী বছরের সংকট মোকাবিলায় খাদ্য আমদানিতে উৎসে কর ছাড় দেয়াসহ ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
উৎপাদন বাড়ানো, বিদেশি দক্ষ জনবল পাঠানো, রেমিট্যান্স বাড়ানো, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো, খাদ্য মজুত স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রাখার বিষয়ে মন্ত্রিসভা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।