আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

গো মাংস বিক্রি কিংবা খেলে হতে পারে ৭ বছরের জেল

গো মাংস বিক্রি কিংবা খেলে হতে পারে ৭ বছরের জেল

কাশ্মীরের মতো ভারতের আরেক মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপে ছোবল বসাতে যাচ্ছে বিজেপি। দ্বীপটিতে নতুন প্রশাসক নিয়োগের পর ধ্বংস হওয়ার পথে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর জনজীবন। প্রশাসকের প্রস্তাবিত নতুন আইনে রাখা হয়েছে বিতর্কিত সব সিদ্ধান্ত। 

উল্লেখ্য, নতুন এই আইনে গো মাংস বিক্রি কিংবা খেলে হতে পারে অন্তত ৭ বছরের জেল। এমন সিদ্ধান্তের বিপরীতে দ্বীপটিতে চলছে বিক্ষোভ। আর কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে সুরাহা চাইছে জায়ান্ট সব রাজনৈতিক দল।
 
আরব সাগরে ৩৬টি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে ভারতের লাক্ষাদ্বীপ। প্রাকৃতিক এই লীলাভূমিতে বাস করেন ৬৫ হাজার মানুষ। শিক্ষার হার ৯৬ শতাংশ।

১৯৫৬ থেকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলটির জীবনধারা সহজ-সরল। অপরাধের হার শূন্যের কোটায়। করোনার প্রথম বছরে এই জনপদে থাবা বসাতে পারেনি বৈশ্বিক মহামারি। 

তবে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে মাস ছয়েকের মধ্যে সবকিছু ওলট-পালট করে দিয়েছেন গুজরাটের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রফুল্ল খোড়া প্যাটেল।

নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানোয় জেলে পুড়েন বেশ কয়েকজন জেলেকে। বাতিল করা হয় লাক্ষাদ্বীপে আসা পর্যটকদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার নিয়ম। এতে ৩-৪ মাসের ব্যবধানে করোনা আক্রান্ত হন ৭ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা। ভেঙে পড়ে দ্বীপটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। চাকরিচ্যুত হন চুক্তিভিত্তিক ৫শ' সরকারি কর্মকর্তা। চেষ্টা করছেন নিপীড়নমূলক নতুন আইন তৈরির। যাকে গুন্ডা অ্যাক্ট বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

দ্য হিন্দুর কাচি ব্যুরো চীফ এস আনন্দন বলেন, প্রস্তাবিত সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইনে যে কাউকে চাইলে ১২ মাস কারাগারে আটকে রাখতে পারবেন। চাইলে দ্বীপ থেকে সরিয়ে দিতে পারবেন ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতে। শঙ্কা হলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বীপে এ আইনের ব্যবহার ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।

প্রস্তাবিত আইন পাশ হলে ক্ষমতা হারাবে স্থানীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা। গো-মাংস বিক্রি বা খাওয়ার সাজা দেয়া হবে ৭ বছরের জেল। এছাড়া শত বছরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে তৈরি হবে বহুতল হোটেল, রিসোর্ট।

দেশটিতে বিজেপির ৩০৩ এমপির ৯৬ জনেরই যখন ২ সন্তানের বেশি তখন নতুন আইনে দুই সন্তানের বেশি হলে দেয়া হবে না নির্বাচনে প্রার্থিতার সুযোগ।

ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি-এনসিপির এমপি মোহাম্মদ ফাইজাল বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে এতটুকু ছোয়া লাগেনি লাক্ষা দ্বীপে। সবাই কোয়ারেন্টিন নীতি মানছিলেন। প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার পরই সব বিধিনিষেধ তুলে দেন। তার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে এখন করোনায় মানুষ মরছে। দ্রুত তার অপসারণ চাই।

স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ নতুন এই প্রশাসকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করছেন দ্বীপের বাসিন্দারা। এরই মধ্যে এমন অব্যবস্থাপনার নিন্দা জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে কংগ্রেসসহ সর্বভারতীয় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন গো | মাংস | বিক্রি | কিংবা | খেলে | হতে | পারে | ৭ | বছরের | জেল