আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

আইসিইউ’তে কলেজ ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন

আইসিইউ’তে কলেজ ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন
কুমিল্লায় প্রাইভেট হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন কলেজ ছাত্রীকে(১৭) যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে (টাওয়ার হাসপাতালের) এ অপকর্মের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় দ্বিপক চন্দ্র দাসকে হাসপাতাল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার সময় আইসিইউতে থাকা চিকিৎসক ও নার্সদেরও শোকজ করা হয়েছে। রোববার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় অপকর্মের বর্ণনা দিয়ে অভিযুক্তের বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বড় ভাই। ঘটনার পর ভুক্তভোগী ছাত্রী বাড়ি ফিরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে তাকে অন্য একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় কলেজছাত্রীর বড় ভাই বলেন,  ‘কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) শেষ রাতের দিকে আমার বোন যখন কান্নাকাটি করতে থাকে, ভেতর থেকে আমাদের তার সঙ্গে দেখা করতে বললে আমরা দেখা করতে যাই। তখন সে কান্না করতে করতে আমাদের জানায়, দ্বিপক নামের এক ওয়ার্ড বয় তার শরীরে একাধিকবার স্পর্শ করেছে। আমার পক্ষে আসলে এটা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তারপর আমরা ঘটনাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন একটা দায় সারাভাবে আছে। তারা এমনভাব করছে যেন এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে, আমরাই শুধু রিয়েক্ট করলাম। অভিযুক্ত ব্যক্তি ২০১৩ সাল থেকে চাকরি করছে। যদি দ্বিপক প্রথম দিক থেকে আইসিইউতে থেকে থাকে, তাহলে সে রেগুলারই এই কাজগুলো করে গেছে। দ্বিপকরা অন্য যেসব হসপিটালেও আছে। সেসব আমার মা-বোনেরা হয়তো তাদের অত্যাচার অনাচারের শিকার হচ্ছেন। আমার এই ভিডিওর মাধ্যমে সতর্ক করাই মূল উদ্দ্যেশ্য’। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার আমার বোন অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে আমরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের (টাওয়ার হাসপাতালের) ইমার্জেন্সি ইউনিটে নিয়ে যাই। এ সময় সেখানে একজন চিকিৎসক আইসিইউতে নিয়ে যেতে বলেন। তখন আমরা আইসিইউতে নিয়ে যাই। সেখানে বিকেল থেকে পরদিন শনিবার সকাল পর্যন্ত ছিল সে’। তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার শেষ রাতের দিকে তার কান্নার কথা জানিয়ে দায়িত্বরতরা আমাদের ভেতরে যেতে দেন। পরে ভেতরে গেলে সে আমাদের জানায়, আইসিইউতে শেষ রাতের দিকে এক ব্যক্তি তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে। তার নাম দ্বিপক। সে হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। এই কারণেই সেখানে অসুস্থ বোন আমার কান্না করছিল। আমার বোন রোববার আবার অসুস্থ হয়ে গেলে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। সে বিষয়টা মেনে নিতেই পারছে না। তবে টাওয়ার হাসপাতালে আমরা অভিযোগ দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা নাকি তদন্ত কমিটিও করছে।’ অভিযুক্ত দ্বিপকের মোবাইল ফোন এখন বন্ধ। তবে কুমিল্লা মেডিক্যাল সেন্টারের (টাওয়ার হাসপাতালের) ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,  অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়কে হাসপাতাল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া যারা ওই সময় আইসিইউতে দায়িত্বরত ছিলেন সবাইকে শোকজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাম্মদ মনজুর মোর্শেদ জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আইসিইউতে | কলেজ | ছাত্রীকে | যৌন | নির্যাতন