ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তার করা অভিযোগ লিখিত আকারে গ্রহণ করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
সোমবার (১৪ জুন) সকালে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন।
এর আগে, রোববার (১৩ জুন) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে বনানীর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার বিস্তারিত জানান ঢালিউড নায়িকা পরীমনি। তুলে ধরেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিবরণ।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, গেল বুধবার (৯ জুন) রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও পরীর পোশাক ডিজাইনার জিমির সঙ্গে বাইরে বের হয়েছিলেন। রাত ১২টার দিকে অমি তাদের নিয়ে ঢাকা বোট ক্লাবে যান। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে পরীর পরিচয় করিয়ে দেন অমি। পরে অমি সেখানে থাকা নাছির ইউ মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির কাছে নিয়ে যায়। সে সময় নাছির ইউ মাহমুদ নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাছির ইউ মাহমুদ আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড় থাপ্পড় মারেন। তারপর নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টা করেন।’
পরীমনি বলেন, ‘অমি একজন ব্যবসায়ী এবং তার কস্টিউম ডিজাইনার জেমির স্কুল বন্ধু। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত’।
পরী বলেন, ‘আমি বলতে চাই, কিন্তু বলতে পারছি না। কিন্তু আমার বলতে ইচ্ছা করছে অনেক। আমি চারদিন ধরে পাগল হয়ে গেছি। আমার জায়গায় থাকলে আপনারা কথা বলতে পারতেন না।’
ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন পরীমনি। সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তার অভিযোগ রেকর্ড করেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় পুলিশের সাহায্যে পরীমনি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। পরীমনি বলেন, ‘আমি সুইসাইড করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, বুঝবেন মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না, সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব। আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে। আমি অন্যায়ের বিচার চাই।’
এর আগে, রোববার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিমনি। এ ঘটনার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে খোলা চিঠি পোস্ট করেছেন পরীমনি।
পরে শিল্পী সমিতির সঙ্গেও যোগাযোগ করেন পরীমনি। তার ভাষায়, ‘সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান তাকে আশ্বস্ত করলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন।’