আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

প্রাণ বাঁচিয়ে শত প্রাণীর বন্ধু ‍তিনি

প্রাণ বাঁচিয়ে শত প্রাণীর বন্ধু ‍তিনি

রাজস্থানে ৬৫ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ছোট একটা দোকান চালান পীরারাম বিষ্ণোই। মূলত গাড়ির টায়ার সারান তিনি। সারাদিনে যা উপার্জন হয়, খাওয়ার খরচেই প্রায় সবটা লেগে যায়। এই অতি সাধারণ মানুষটির একটি অসাধারণ কাহিনী রয়েছে।

টায়ার সারানোর পাশাপাশি তিনি জীবনও বাঁচান। এতদিনে প্রায় এক হাজার ১৮০টি প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি। কী ভাবে?

পশ্চিম রাজস্থানের খুবই নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম পীরারামের। তাঁর বাড়ির একদিকে ভারতের গুজরাট  আর একদিকে পাকিস্তানের সীমানা। এই এলাকার পাশেই ছিল ঘন জঙ্গল।

বাবা সামান্য চাষি ছিলেন। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে মাঠে চাষাবাদের কাজ করতেন পীরারাম। মাঝে মধ্যেই সেই জঙ্গল থেকে ময়ূর, খরগোশ, হরিণ বেরিয়ে চাষের জমিতে চলে আসত। কখনও ফসল নষ্ট করত, আবার কখনও জমিতে খেলে বেড়াত তারা।

পীরারাম খুব অবাক হয়ে দেখতেন, ফসল নষ্ট করলেও তাঁর বাবা কখনও সেই সব প্রাণীদের তাড়িয়ে দিতেন না। উত্তরে তাঁকে বাবা বলেছিলেন, এই প্রাণীগুলো না থাকলে মানুষও বাঁচতে পারবে না।

এর পর অনেক বছর কেটে গিয়েছে। পীরারামের বয়স বেড়েছে। ৬৫ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে টায়ার মেরামতির একটি দোকান খুলেছেন।

গাড়ি চালকের থেকে প্রথমে জানতে পারেন, মাঝেমধ্যেই রাস্তা পার করতে গিয়ে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় বন্যপ্রাণীদের। পীরারামের দোকানের ৩০০ মিটার এলাকা জুড়ে জঙ্গল। অথচ সেখানে কোনও রক্ষী ছিল না।

সে দিনই প্রথম নিজেকে অসহায় লেগেছিল পীরারামের। তাঁর একার পক্ষে কী ভাবে এই বন্য প্রাণীগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এ রকমই একদিন বাড়ি থেকে দোকানে যাওযার সময় তাঁর সামনেই একটি হরিণের মোটরবাইকে দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রায় মরতে বসেছিল হরিণটি। কোনওক্রমে নিজেকে টেনে রাস্তার পাশে নিয়ে গিয়েছিল। পীরারামের ব্যথিত হৃদয় তা চোখের সামনে দেখতে পারছিল না। হরিণটিকে কোলে তুলে নিয়ে একটি গাড়ি থামিয়ে তিনি পশু চিকিত্সালয়ে নিয়ে যান। নিজে সমস্ত খরচ করেন। তারপর বাড়িতে নিয়ে আসেন তাকে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন প্রাণ | বাঁচিয়ে | শত | প্রাণীর | বন্ধু | ‍তিনি