ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আঙুলের অস্ত্রোপাচারে মৃত্যু শিশু মারুফা জাহান মাইশার(৬) মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়েছে। দাফনের দশ দিন পর ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে শিশু মাইশার মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ।
আজ সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাপারী পাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত শিশু মাইশার বাবা মোজ্জাফর হোসেন মামলায় উল্লেখ্য করেন, মাত্র নয় মাস বয়সে তার মেয়ে মাইশার হাত চুলার আগুনে পুড়ে যায়। সেসময় চিকিৎসায় হাতের ক্ষতস্থান শুকিয়ে গেলেও ডান হাতের ৩ আঙুল কুঁকড়ে গিয়েছিল। এরকম ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতলের ডাক্তারের পরামর্শে তিনি গত ৩০ নভেম্বর মেয়ের আঙুলের অপারেশন করাতে নিয়ে আসেন। আঙুলের অপারেশনে শিশু মাইশার মৃত্যু হয়। মেয়ের মরদেহ বাসায় এনে গোসলের সময় পরিবারের লোকজন দেখেন মেয়ের নাভীর নিচের অংশের পেট সম্পূর্ণ কাটা, সেলাই করা। এমতাবস্থায় তারা স্থানীয় থানায় জানিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ২ ডিসেম্বর মাইশার মরদেহ দাফন করেন। আঙুলের অপারেশনে অসৎ উদ্দেশ্যে পেট কেটে তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহ হলে ৫ ডিসেম্বর থানায় মামলা করেন।
মামলার বাদী নিহত শিশু মাইশার বাবা মো. মোজ্জাফর হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ের হাতের আঙুলের অপারেশন করতে (৩০ নভেম্বর) ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়েছিলাম। সেখানে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়। বাসায় মেয়েকে গোসল করানোর সময় স্থানীয় মহিলারা আমার মেয়ের পেটে কাটা সেলাই দেখতে পায়। হাতের আঙুলের অপারেশনে আমার মেয়ের পেট কেটেছে কেন? ডাক্তাররা অসৎ উদ্দেশ্যে আমার মেয়ের পেট কেটে তাকে হত্যা করেছে। মেয়ের হত্যার সঠিক বিচারের আশায় আমি ঢাকা রূপনগর থানায়(৫ ডিসেম্বর) মামলা করি। আজ সোমিবার আমার মেয়ের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমি সঠিক বিচারের আশায় আছি।’
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নয়ন দাস জানান, ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে আঙুলের অপারেশন করতে শিশু মৃত্যু ঘটনায় নিহতের বাবা মো. মোজ্জাফর হোসেন(৩৩) বাদী হয়ে গত ৫ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর রূপনগর থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিত তদন্তের স্বার্থে নিম্ন আদালতের কাছে মরদেহ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের আবেদন করলে, আদালত কবর থেকে মরদেহ তোলার নির্দেশ দেয়। তদন্তের স্বার্থে আজ সোমবার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মরদেহ তুলে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাপ্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।