আর্কাইভ থেকে করোনা ভাইরাস

করোনার 'যুগান্তকারী' নতুন চিকিৎসা খুঁজে পেয়েছে ব্রিটিশ গবেষকরা

করোনার 'যুগান্তকারী' নতুন চিকিৎসা খুঁজে পেয়েছে ব্রিটিশ গবেষকরা

সস্তা স্টেরয়েড ওষুধ করোনাভাইরাসে মৃত্যু ঠেকাতে পারে। এক বছর আগে এমনটাই জানিয়েছেল গবেষকরা। এর ঠিক এক বছর পর ব্রিটেনের গবেষকরা বলছে, নতুন একটি জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসার পথ খুঁজে পেয়েছে তারা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নতুন চিকিৎসার নাম মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট। এই চিকিৎসা পরীক্ষায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দুইজন গবেষক। তারা হলেন, স্যার মার্টিন ল্যানড্রে ও স্যার পিটার হরবি। এটি উদ্ভাবন করেছে রিজেনারন নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

বেশ ব্যয়বহুল নতুন এই চিকিৎসায় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের বদলে স্যালাইনের মাধ্যমে শক্তিধর অ্যান্টিবডি মানুষের শরীরের শিরায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যা ভাইরাসকে পরাস্ত করতে পারে।

হাসপাতালে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, কোভিডে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন সেরে উঠেছে।

বিশেষজ্ঞরা হিসেব করে দেখেছে, এই চিকিৎসা দিয়ে করোনায় আক্রান্ত প্রতি ১০০ জন রোগীর মধ্যে ছয়জনের জীবন রক্ষা করা সম্ভব।

ট্রায়ালে প্রদাহবিরোধী স্টেরয়েড ওষুধ ডেক্সামাথাসোনের পাশাপাশি রোগীদের ওপর নতুন এই চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয়। তবে যেসব রোগীর শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না শুধু তাদেরই এই চিকিৎসা দেওয়া হয়।

যুগান্তকারী চিকিৎসা

এই চিকিৎসায় খরচ পড়ে ১,০০০ থেকে ২,০০০ ডলার।

এই চিকিৎসার ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন ৩৭ বছর বয়সী কিম্বারলি ফেদারস্টোন। তিনি বলছেন, আমার ভাগ্য ভাল করোনা হওয়ার পর আমাকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ততদিনে এই পরীক্ষা চালু হয়ে গেছে। এই যুগান্তকারী পরীক্ষায় আমি অংশ নিতে পেরেছি।

নতুন চিকিৎসার ওষুধ করোনার কোষকে ঘিরে ধরে। ফলে শরীরের অন্য কোন কোষে ভাইরাস আর সংক্রমিত হতে পারে না এবং সংখ্যায়ও বাড়তে পারে না।

ব্রিটেনের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ১০ হাজার করোনা রোগীর ওপর এই চিকিৎসার পরীক্ষা চালানো হয়। ফলাফলে দেখা গেছে:

মৃত্যু ঝুঁকি অনেক কমে গেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসার সময় যা গড়ে চার দিন, কমে গেছে সেই সময়ও।

ভেন্টিলেটর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাও কমানো গেছে।

এই চিকিৎসা পরীক্ষায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দুইজন গবেষক। তাদের একজন স্যার মার্টিন ল্যানড্রে। তিনি বলেন, দুই ধরনের অ্যান্টিবডি মিশিয়ে স্যালাইনের মাধ্যমে শিরায় প্রবেশ করানো হলে কোভিড রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা এক পঞ্চমাংশ কমে যায়।

চরম অনিশ্চয়তা

ট্রায়ালে প্রদাহ-বিরোধী স্টেরয়েড ওষুধ ডেক্সামাথাসোনের পাশাপাশি রোগীদের ওপর নতুন এই চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয়। পরীক্ষার দ্বিতীয় প্রধান গবেষক স্যার পিটার হরবি জানান, অ্যান্টিবডি চিকিৎসা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা ছিল। কারণ কোন কোন পরীক্ষায় দেখা গেছে, এটা খুব একটা সুফল বয়ে আনে না।

করোনা রোগীদের রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে কোভিড চিকিৎসায় আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি। কিন্তু নতুন এই চিকিৎসার রিকভারি ট্রায়ালে ল্যাবরেটরিতে তৈরি দুটি সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিবডির মিশ্রণ রোগীর শরীরে ঢোকানো হয়, যা করোনাভাইরাসের কোষে আটক যায়।

স্যার পিটার জানান, কোভিড-১৯ এর মারাত্মক অবস্থায়ও রোগীর শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে যে এই চিকিৎসা কার্যকর তা খুবই খুশির বার্তা।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন করোনার | যুগান্তকারী | নতুন | চিকিৎসা | খুঁজে | পেয়েছে | ব্রিটিশ | গবেষকরা