আর্কাইভ থেকে জাতীয়

ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ

ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে কুয়াশা ও কনকনে শীত উপেক্ষা করেই গত শুক্রবার থেকে লাখ লাখ মুসল্লির পদভারে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ইজতেমা ময়দান। ফজরের পর বয়নের মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রথম পর্বের তৃতীয় দিন। রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করেছেন। ইজতেমা ময়দানে আসতে এবং ময়দানে প্রাঙ্গণে অনেক সমস্যা থাকলেও এ নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ নেই। বরং মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে করোনা মহামারির সময় পেরিয়ে একত্রে আবারও সমবেত হতে পারায় কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বারবার। ইজতেমা ময়দানে নেই কোনো বৈষম্য, ভেদাভেদ। সবার পরিচয় তারা আল্লাহর বান্দা ও রাসুলের (সা.) উম্মত। নবীওয়ালা জিন্দিগী গড়ে তুলতে দাওয়াতে তাবলিগের দীক্ষা নিতেই হাজির হয়েছেন এই সম্মেলনে। তারা বিশ্বকে জানাতে চান এটাই যে ইসলামের মহত্ব। আজ ফযরের নামাজের পর থেকে শুরু হয় তৃতীয় দিনের বয়ান। বয়ান শুরু করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। তার বয়ানের পরই হেদায়েতি বয়ান হওয়ার কথা রয়েছে। হেদায়েতি বয়ান শেষ হলে শুরু হবে আখেরি মোনাজাত। হেদায়েতি বয়ান ও আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইলের সুরা সদস্য কারি মোহাম্মদ জোবায়ের। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পক্ষের (জোবাইর অনুসারী) আয়োজনে এবারের ইজতেমা। চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন। এদিকে, বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে কয়েকটি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা থেকে আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত এসব সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, আখেরি মোনাজাতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক শরিক হবেন। সেজন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ জন্য শনিবার রাত ১২টার পর থেকে কয়েকটি সড়ক বন্ধ রাখা হবে। এ সময় যানবাহন চলাচলে বাইপাস সড়ক ব্যবহার করতে হবে। সড়কগুলো হলো, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত, কামারপাড়া রোড, আশুলিয়ায় রোডের আবদুল্লাহপুর থেকে বাইপাইল পর্যন্ত। এবার ইজতেমা ময়দানে রোববার সকাল পর্যন্ত ৬ মুসল্লির মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। ময়দানে মরদেহের জিম্মাদার মাওলানা মুহাম্মদ শাকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত মুসল্লিদের মরদেহ উদ্ধার করে গোসল ও কাফন পরিয়ে স্বজনদের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, নরসিংদীর মনোহরদী থানার মাসিমপুর গ্রামের রহমতুল্লাহর ছেলে হাবিবুর রহমান হাবি, চট্টগ্রামের রাউজান থানা সদরের আবদুর রশিদের ছেলে আবদুর রাজ্জাক এবং খুলনার ডুমুরিয়া থানার মলমলিয়া গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে মুফাজ্জল হোসেন খান, গাজীপুরের আবু তৈয়ব ওরফে আবু তালেব (৯০), সিলেটের নুরুল হক (৬৩) এবং মুন্সীগঞ্জের আক্কাস আলী (৫০)। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিশেষ আকর্ষণ ছিল যৌতুকবিহীন শতাধিক বিয়ে। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মাওলানা জহির ইবনে মুসলিম সাংবাদিকদের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভারতের মাওলানা মো. জোহায়রুল হাসান ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম-উত্তর দিকের দোয়া মঞ্চে এ বিয়ে পড়ানো হয়। হজরত ফাতেমা (রা.) ও হজরত আলী (রা.)-এর বিয়ের দেনমোহর অনুসারে বিনা যৌতুকে শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আগে বাদ আসর হাফেজ মাওলানা জোবায়ের বিয়ের খুতবা প্রদান করেন। বয়ান শেষে বর-কনের অভিভাবকদের সম্মতিতে বরের উপস্থিতিতে এ বিয়ে পড়ানো হয়। বিয়ে শেষে উপস্থিত দম্পতিদের স্বজন ও মুসুল্লিদের মধ্যে খুরমা খেজুর বিতরণ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ইজতেমার | প্রথম | পর্বের | আখেরি | মোনাজাত | আজ