আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ল প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ল প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বসবাস শুরুর আগেই ভেঙে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুর্যোগসহনীয় ঘর। 

বর্ষা মৌসুমের টানা দুদিনের বৃষ্টিতে ভূমিহীনদের দেয়া এসব বাড়ির একপাশের মাটি ধসে পড়ে।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার খানপুর বুড়িগাড়ি এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ির পেছনে মাটি খালে ধসে পড়েছে। এতে কয়েকজনের ঘরগুলো ভেঙে পড়েছে। খালটিতে বাঁশের পাইলিং করে প্রকল্পের বাড়িগুলো রক্ষার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু বারবার মাটি ধসে খালে পড়ায় ভেঙে পড়া ঘরগুলো পুনর্নির্মাণকাজ করতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তড়িঘড়ি করে খালের কিনারায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। খালের মাটি কেটে বাড়ির চারপাশে দেয়া হয়। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি খালে ধসে যাওয়ায় ঘরগুলোর এই হাল হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় অতিদরিদ্র ভূমিহীনদের জন্য সরকারিভাবে আধাপাকা বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। 

সে মোতাবেক শেরপুর উপজেলায় দুই কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে দুই শতক করে খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে অতিদরিদ্র ১৬৩টি ভূমিহীন পরিবারকে একটি করে আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়। দুই কক্ষ, রান্নাঘর ও টয়লেটসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের প্রত্যেকটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এরই ধারাবাহিকতায় খানপুর ইউনিয়নের খানপুর বুড়িগাড়ি নামক স্থানে খালের কিনারায় ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২২টি আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে সুফলভোগীদের হাতে এসব বাড়ির জমির দলিল ও বাড়ির চাবি হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু এসব নতুন বাড়িতে ওঠার আগেই ঘটছে নানা বিপত্তি। বর্ষা মৌসুমের টানা দুদিনের বৃষ্টিতেই দুর্যোগসহনীয় সাতটি ঘর ভেঙে পড়েছে।

আবুল কালাম আজাদ, বাদশা মিয়াসহ একাধিক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে কোনো সময় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাকি ঘরগুলোও ভেঙে পড়তে পারে। ভাঙন আতঙ্কে তারা দিনাতিপাত করছেন।

শুধু বর্ষার বৃষ্টিতে ঘর ভেঙে পড়া নয়, দেয়া হয়নি এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ। বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কটও রয়েছে। পুরো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২২টি পরিবারের জন্য মাত্র একটি হস্তচালিত নলকূপ চালু রয়েছে। সবমিলিয়ে এখানে বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ। তাই প্রকল্পের বাকি ১৫টি ঘর ঠিক থাকলেও এসব ঘরে কেউই থাকছেন না বলে জানা গেছে।

খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাটি যাতে ধসে না পড়ে সেজন্য খালের ধারে বাঁশের পাইলিং দেয়া হচ্ছে। ভেঙে পড়া কয়েকটি টয়লেট ও রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। তাই তেমন কোনো সমস্যা নেই। সুবিধাভোগী অনেকেই এখন ওইসব নতুন ঘরে বসবাস শুরু করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ময়নুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের দু’পাশের ঘরগুলো সব ঠিক আছে। কিন্তু মাঝখানে মাটি ধসে যাওয়ায় চার-পাঁচটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালককে জানানো হয়েছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বৃষ্টিতে | ভেঙে | পড়ল | প্রধানমন্ত্রীর | উপহার | আশ্রয়ণ | প্রকল্পের | ঘর