অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রসঙ্গ উঠলেই সারাহ ইসলামের নাম মানুষের মনে পড়বে। ২০ বছর বয়সী সারাহ রোগশয্যায় থেকে নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করে যান মাকে। ফলে তার দুটি কিডনি দুই নারীর শরীরে আর কর্নিয়া দুটি দুই পুরুষের চোখে প্রতিস্থাপন করেছে চিকিৎসকেরা। তাদের চারজনই ভালো আছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মৃত ঘোষিত সারাহ ইসলামের একটি কিডনি দেয়া হয় মিরপুরের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে। ওই গৃহবধূর কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজটি হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে ওই ব্যবসায়ী জানান, তার স্ত্রী ভালো আছেন।
সারাহ ইসলামের অন্য কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয় রাজধানীর মিরপুরের বেসরকারি কিডনি ফাউন্ডেশনে। হাসপাতালের প্রধান ও দেশের বিশিষ্ট কিডনি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ জানান, ওই নারী ভালো আছেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সারাহর দুটি কর্নিয়া দুই পুরুষের চোখে লাগানো হয়। একটি বিএসএমএমইউতে এবং অন্যটি সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে। জানা গেছে তারাও ভালো আছেন।
গেলো বুধবার দেশে প্রথম মৃত ঘোষিত কোনো ব্যক্তির অঙ্গ অন্য কোনো রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছর বয়সি সারাহ ইসলাম। দেশের আইন মেনে সারাহর মৃত্যু ঘোষণার পর তার অঙ্গদানে সম্মত হন মা শবনম সুলতানা। গুরুতর অসুস্থ থাকার সময় সারাহ নিজে এমন ইচ্ছার কথা তার মাকে বলেছিলেন।
এই জটিল অস্ত্রোপচারে একাধিক চিকিৎসক কাজ করেছিল। তাদের কাজের সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান। তিনি বলেন, কর্নিয়া দেয়া দুই ব্যক্তিও সুস্থ আছেন।