পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ স্তরে (প্লুটোর আকারের মতো একটি গরম লোহার বল) গ্রহের বাকি অংশের মতো একই দিকে ঘোরা বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি এটি বিপরীত দিকে ঘুরছে।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক গবেষণায় পাওয়া গেছে বলে এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
আমরা যে পৃষ্ঠে বাস করি তার প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার নিচে, এই গ্রহের মধ্যে গ্রহ স্বাধীনভাবে ঘুরতে সক্ষম। কারণ বাইরের স্তরে তরল ধাতবে এটি ভাসতে পারে।
অভ্যন্তরীণ স্তরটি ঠিক কিভাবে ঘোরে তা বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বসাম্প্রতিক গবেষণাটিও বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
ভূমিকম্পের তরঙ্গগুলো যখন পৃথিবীর মধ্য দিয়ে যায়, তখন ক্ষুদ্র পার্থক্যগুলো পরিমাপ করে বা কখনও কখনও পারমাণবিক বিস্ফোরণ দ্বারা সৃষ্ট তরংগ থেকে অভ্যন্তরীণ স্তর সম্পর্কে আমরা যত্সামান্য জানতে পারি।
নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় গত ছয় দশক ধরে পুনরাবৃত্তি হওয়া ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে অভ্যন্তরীণ স্তরের ঘোরার গতি বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে।
এই গবেষনার লেখক চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটির জিয়াওডং সং এবং ই ইয়াং বলেন, তারা দেখতে পেয়েছেন যে, অভ্যন্তরীণ স্তরের ঘূর্ণন ২০০৯ সালের দিকে প্রায় থেমে যায় এবং তারপরে বিপরীত দিকে মোড় নেয়।
তারা এএফপিকে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, পৃথিবীর পৃষ্ঠের মতো এই অভ্যন্তরীণ স্তরটিও দোলনার মতো করে দোলে। এটি প্রায় প্রতি ৩৫ বছরে দিক পরিবর্তন করে।
ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার সিসমোলজিস্ট জন ভিদালে বলেন, চমৎকার সব বিজ্ঞানীরা অনেক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এটি গবেষণা করেছেন। তবে কোনও মডেলই আমার মতে সব তথ্য খুব ভালভাবে ব্যাখ্যা করে না।
ভিদালে গত বছর একটি গবেষণা প্রকাশ করেছিলেন যা ইঙ্গিত দেয় যে, অভ্যন্তরীণ স্তরটি আরও দ্রুত দোলন কর, প্রতি ছয় বছর বা তারও বেশি সময় ধরে দিক পরিবর্তন করে। তার কাজটি ১৯৬০ দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৭০ দশকের গোড়ার দিকে দুটি পারমাণবিক বিস্ফোরণের ভূমিকম্প তরঙ্গের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।
গবেষণায়, অভ্যন্তরীণ কোরটি সর্বসাম্প্রতিক দিক পরিবর্তন করেছে বলা হলে- ভিদালে একে এক ধরনের কাকতালীয় ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন।