গত কয়েকদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে দেখা যাওয়া রহস্যময় চীনা বেলুনটি গুলি করে নামানো হয়েছে। মার্কিন ফাইটার জেট তাদের আঞ্চলিক জলসীমায় বেলুনটি নামিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি- চীনা বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সাইটগুলোতে গুপ্তচরবৃত্তি করছিল।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সামরিক বাহিনী অভিযান পরিচালনা করায় যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলিনার উপকূলে তিনটি বিমানবন্দর এবং আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়া হয়।
বার্তা সংস্থা এপি’র ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একটি ছোট বিস্ফোরণের পর বেলুনটি সমুদ্রে পড়ে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে দেশটির আকাশসীমায় প্রথম উপস্থিত হওয়ার পর থেকে বেলুনটি নামানোর জন্য চাপের মধ্যে ছিলেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে দেখা যাওয়া চীনা বেলুনটি একটি ওয়েদার ডিভাইস বলে দাবি চীনের। নিজের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণেই এটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছে বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ সম্পর্কিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য ও দুঃখও প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, যে বেলুনটি নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি আসলে একটি ওয়েদার ডিভাইস এবং পুরোপুরি বেসামরিক একটি উপকরণ। মূলত আবহাওয়া পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতেই বেলুনটি আকাশে ওড়ানো হয়েছিল।
গত কয়েকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আকাশে রহস্যময় ওই বেলুনটি উড়তে দেখা যায়। প্রথমে এটি আলাস্কার আকাশে দেখা গিয়েছিল, পরে কানাডা এবং সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের আকাশে উড়তে দেখা যায় বেলুনটি।
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মন্টনায় দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর গোলাবারুদ ও ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত রাখা হয়। এ কারণে এই অঙ্গরাজ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্ষেপণাস্ত্রের গুদাম’ নামেও পরিচিত।
বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে অনুসারে, বেলুনটির সম্ভাব্য আকার তিনটি বাসের সমান।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনের দাবি, এই বেলুনটি আসলে চীনের উচ্চক্ষমতার গোয়েন্দা নজরদারি ডিভাইস। পেন্টাগন কর্মকর্তারা প্রথমে বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ মাটিতে আছড়ে পড়লে নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিতে পারে— আশঙ্কায় তা বাতিল করা হয়।
তবে বুধবার মন্টানার আকাশে বেলুনটি দেখা যাওয়ার পর জরুরি বৈঠকে বসেন পেন্টাগন কর্মকর্তারা। সেই বৈঠকে যুদ্ধ বিমান ব্যবহারের মাধ্যমে বেলুনটি ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এই বেলুন সংক্রান্ত জটিলতার জেরে ইতোমধ্যে বেইজিংয়ে নিজের নির্ধারিত সফর বাতিল করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।