আর্কাইভ থেকে জাতীয়

আশুরায় তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা বন্ধ

আশুরায় তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা বন্ধ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছরের আশুরায় তাজিয়া মিছিল ও শোভাযাত্রা বন্ধ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৬ আগস্ট ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বিজ্ঞপ্তির অনুবৃত্তিক্রমে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সকল ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইতিপূর্বে আরোপিত বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। একই সঙ্গে পবিত্র মহররম উপলক্ষে সকল প্রকার তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে।
 
তবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণপূর্বক আবশ্যক সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
আগামী ২০ আগস্ট শুক্রবার (১০ মহররম) পবিত্র আশুরা পালিত হবে।
 
আশুরা হলো ইসলামের একটি ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস। ইসলামিক পঞ্জিকা অনুযায়ী মহররমের দশম দিনকে আশুরা বলা হয়। এটি ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। সুন্নি মতানুযায়ী ইহুদিরা মুসার বিজয়ের স্মরণে আশুরার সাওম বা রোজা পালন করত। তবে শিয়া মত আশুরার পূর্ব ইতিহাসকে প্রত্যাখ্যান করে এবং তারা আশুরাকে কারবালার বিষাদময় ঘটনার স্মরণে পালন করে।
 
এই দিনটি শিয়া মুসলমানেরা বেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করে থাকে। এ উপলক্ষে তারা বিভিন্ন ধরনের মিছিল, মাতম ও শোকানুষ্ঠান আয়োজন করে। তবে একটি ক্ষুদ্র অংশ ততবির পালন করে থাকে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে এসব অনুষ্ঠান চোখে পড়ার মতো। যেমন- পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, লেবানন ও বাহরাইন। তবে আশুরা নিয়ে সুন্নি সমাজে বিভিন্ন মত প্রচলিত আছে।
 
আশুরা মূলত একটি শোকাবহ দিন। কেননা এ দিন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হুসাইন ইবনে আলী নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন। কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে এ দিনটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
 
বলা হয়, এই দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনে পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনে আল্লাহ নবীদেরকে স্ব স্ব শত্রুর হাত থেকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এই দিন নবী মুসা (আ.)-এর শত্রু ফেরাউনকে নীল নদে ডুবিয়ে দেয়া হয়। নূহ (আ.)-এর কিস্তি ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছিল এবং তিনি জুডি পর্বতশৃঙ্গে নোঙর ফেলেছিলেন।
 
এই দিনে দাউদ (আ.)-এর তাওবা কবুল হয়েছিল, নমরূদের অগ্নিকুণ্ড থেকে ইব্রাহীম (আ.) উদ্ধার পেয়েছিলেন। আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্ত ও সুস্থতা লাভ করেছিলেন। এ দিনে আল্লাহ তায়ালা ঈসা (আ.)-কে ঊর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন।
 
যদিও, ভিন্ন মতে ঘটনাগুলোর অনেকগুলোই এই দিনে ঘটেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়নি। ‌আবার প্রচলিত আছে যে, এই তারিখেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। যদিও এ বিষয়ে মতভিন্নতা রয়েছে।
 
ইহুদিরা আশুরা উপলক্ষে মহররম মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখে। শিয়া সম্প্রদায় মর্সিয়া ও মাতমের মাধ্যমে এ দিনটি উদ্‌যাপন করে। আশুরা উপলক্ষে ৯ এবং ১০ মহররম তারিখে অথবা ১০ এবং ১১ মহররম তারিখে রোজা রাখা মুলমানদের জন্য সুন্নত। এ ছাড়া মুসলমানেরা এ দিন উত্তম আহারের জন্য চেষ্টা করে থাকেন।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আশুরায় | তাজিয়া | মিছিল | শোভাযাত্রা | বন্ধ