আর্কাইভ থেকে বিনোদন

সেন্সরবোর্ডে ভারতের ‘পাঠান’, ১২ মে বাংলাদেশে মুক্তির পরিকল্পনা

সেন্সরবোর্ডে ভারতের ‘পাঠান’, ১২ মে বাংলাদেশে মুক্তির পরিকল্পনা
বলিউড তারকা শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ সিনেমা জমা পড়েছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে। বুধবার (৩ মে) সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনউদ্দীন গ্লিটজকে বলেন, “পাঠান সিনেমাটি সেন্সরবোর্ডে জমা পড়েছে। তবে সিনেমাটি দেখার দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।” এদিকে বাংলাদেশে সিনেমাটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট’ আগামী ১২ মে দেশের প্রেক্ষাগৃহে পাঠান মুক্তি দিতে চায়। এ কোম্পানির স্বত্বাধিকারী ও চলচ্চিত্র পরিচালক অনন্য মামুন বলেন, “সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার পরই মুক্তির চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করব। আমরা চেয়েছিলাম ৫ মে।এখন সমিতিগুলো যেহেতু আপত্তি করেছে। তাই আগামী ১২ মে আমরা সিনেমাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরিকল্পনা করছি।” দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) আওতায় উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানির সরকারি অনুমতি মেলার পর প্রথম কোনো হিন্দি সিনেমা সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ল। হিন্দি সিনেমা আমদানি নিয়ে কয়েক মাস ধরে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা শেষে গত ১১ এপ্রিল একগুচ্ছ শর্তে ভারতীয় উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এর ফলে দেশের হলগুলোতে হিন্দি সিনেমা দেখানোর বাধা কাটে। শর্ত হল, প্রথম বছরে দশটি উপমাহাদেশীয় সিনেমা দেশে আনতে হলে সমান সংখ্যক বাংলাদেশি সিনেমা রপ্তানি করতে হবে। হলে দেখানোর আগে বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেতে হবে। এছাড়া আরও কিছু শর্ত রাখা হয়েছে সিনেমা আনার ক্ষেত্রে। হিন্দি সিনেমা ‍মুক্তির অনুমতি দেওয়ায় সে সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন সিনেমা হল মালিক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস। এর মধ্য দিয়ে দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ‘ঘুরে দাঁড়াবে’ বলেও তিনি আশাবাদী। তবে চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম মনে করেন, ভারতীয় সিনেমা আমদানির অনুমতির মধ্য দিয়ে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সংকটের সমাধান হবে না। দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে সুরক্ষা দিতে স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় সিনেমা আমদানি নিষিদ্ধ ছিল। দশককাল আগে একবার সরকার অনুমতি দিলেও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের বিরোধিতার মুখে পিছু হটে। এবারে হিন্দি সিনেমা হলে দেখানোর দাবি ওঠে গত ২৫ জানুয়ারিতে শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ মুক্তির পর। সে সময় হল মালিকরা চাইছিলেন ফেব্রুয়ারির শুরুতেই দর্শকদের পাঠান দেখাতে। এরপর প্রদর্শক সমিতি প্রেক্ষাগৃহগুলোতে আবার ভারতীয় চলচ্চিত্র দেখানোর দেন-দরবার শুরু করে। তাতে অন্য কয়েকটি সংগঠনও সমর্থন দেয়। একাত্মতা জানায় চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের মোর্চা সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ। তাদের কথা ছিল, শর্তসাপেক্ষে হিন্দি সিনেমা আমদানির করা যেতে পারে। দেশে উপমহাদেশীয় ভাষার সিনেমা আমদানির পক্ষে মত দিয়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদও। নির্মাতা অনন্য মামুন বলেন, “আমরা তো চেয়েছিলাম  মে মাসে সিনেমাটি বাংলাদেশে মুক্তি দিতে। এখন দেশের চলচ্চিত্র সমিতিগুলো চাইছে একটু পিছিয়ে মুক্তি দিতে।” ‘পাঠান’ মুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত রোববার ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেছে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত আট সিনেমার পরিচালক। এই নির্মাতার মনে করছেন, ঈদের পরের সপ্তাহে দেশের প্রেক্ষাগৃহে পাঠান ‍মুক্তি পেলে তাদের সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লোকাল’ সিনেমার পরিচালক সাইফ চন্দন বলেন, “ঈদের প্রতিটি ছবিই কমবেশি দর্শক টানছে। এগুলোকে ভালোভাবে ব্যবসা করতে হলে তিন-চার সপ্তাহ সিনেমা হলে চালাতে দেওয়া উচিত। ফলে ‘পাঠান’ সিনেমাটি দুই-তিন সপ্তাহ পর মুক্তি পেলে ভালো।” সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত হিন্দি, তামিল, তেলেগুসহ কয়েকটি ভাষায় মুক্তি পাওয়া পাঠান সিনেমা আয়ের দিক থেকে হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে রেকর্ড গড়েছে। পাঁচ বছর পর এই সিনেমা দিয়ে অভিনয়ে ফেরা শাহরুখ খান ছাড়াও দীপিকা পাড়ুকোন এবং খল চরিত্রে জন আব্রাহাম অভিনয় করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সেন্সরবোর্ডে | ভারতের | পাঠান | ১২ | মে | বাংলাদেশে | মুক্তির | পরিকল্পনা