আর্কাইভ থেকে জাতীয়

খুলছে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দুয়ার

খুলছে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দুয়ার
দীর্ঘ ৯ বছর অপেক্ষার পর খুলছে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দুয়ার। ঢাকার যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের পর এটিই বৃহত্তর মেগাপ্রকল্প। ইতোমধ্যেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ যানচলাচলের জন্য প্রস্তুত। ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন। ৩ সেপ্টেম্বর থেকেই যানবাহন চলাচল করতে পারবে এই উড়াল পথে। প্রথম ধাপে বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার উড়ালসড়ক যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে তিন ভাগে। মূল উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তা ছাড়া ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩১টি র‍্যাম্প আছে উড়ালসড়কে। এসব র‍্যাম্প দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় উঠা- নামা করবে যানবাহন। এ যাত্রায় বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে গাড়ি উঠতে এবং নামতে পারবে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে। এর মধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওঠা এবং নামার জন্য থাকবে একটি করে র‍্যাম্প। কুরিলে ওঠার জন্য দুইটি আর নামার একটি। বনানীতে দুইটি ওঠার, নামারও দুইটি। মহাখালীতে ওঠা যাবে এক পথে আর নামা যাবে দুই পথে। আর ফার্মগেটে নামার পথ একটি তেজগাঁও কলেজের সামনে আর ওঠার রেম্প তিনটি। মোট ১৬ টি র‍্যাম্পের মধ্যে ১৩ টিতে যানবাহন চলাচল করবে শুরুতে। এক্সপ্রেসওয়েটিতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এতে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট। দুই ও তিন চাকার কোনো যানবাহন এই উড়াল সড়কে চলতে পারবে না। এই সাড়ে ১১ কিলোমিটারের জন্য টোল ধরা হয়েছে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মিনিট্রাক ৮০ টাকা, বাস ও মিনিবাস ১৬০ টাকা, মাঝারি ট্রাক ৩২০ এবং বড় ট্রাক ৪০০ টাকা। ঢাকা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য ২০১১ সালের জুন মাসে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব , পিপিপি প্রকল্পের আওতায় এই নির্মাণকাজ ২০১৬ সালে শেষ করার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু উড়ালসড়কের নকশা বদল, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা, অর্থের সংস্থানসহ বিভিন্ন কারণে নির্মাণকাজ শেষ করার সময়সীমা ৫ বার পিছিয়েছে। শুরুতে উড়ালসড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায়। এর মধ্যে সরকার বহন করছে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। এরপর কাজের ধীর গতির সঙ্গে বাড়তে থাকে প্রকল্পের মেয়াদ। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বশেষ ট্যাক্স, ভ্যাটসহ প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে এখন হয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা । এই মেগা প্রজেক্টের বিনিয়োগকারী কোম্পানির নাম ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড। এতে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। প্রকল্পটি ঢাকা শহরের যানজট, ভ্রমণের সময় ও খরচ কমানোর পাশাপাশি ইতিবাচক প্রভাবে ফেলবে জিডিপিতে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন খুলছে | দেশের | প্রথম | এলিভেটেড | এক্সপ্রেসওয়ের | দুয়ার