আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার হওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের সিংহভাগের মেয়াদ নেই। বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবন, পাঁচটি হল ও একটি প্রশাসনিক ভবনে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। আবার যেগুলো আছে তাদের অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, দপ্তর, আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় কাফেটেরিয়া, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চলাচলের জায়গাগুলোতে অগ্নি দুর্ঘটনায় একমাত্র ভরসা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোর রাসায়নিক মেয়াদোত্তীর্ণ।
বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন-পুরনো মোট দুইশোর অধিক মতো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের প্রতিটি
ফ্লোরে দুই-তিনটা করে সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। এক বছর আগে এ যন্ত্রগুলো নতুন করে লাগানো হলেও কিছু কিছু জায়গায় মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও যন্ত্রগুলো পরিবর্তন করা হয়নি।
এ ছাড়া অনেক যন্ত্রে নেই মেয়াদকাল নির্দেশক স্টিকারও। দু-একটি থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটলে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা যেমন নেই তেমনি ভবনগুলো থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বের করে আনার ব্যবস্থাও নেই। এমনকি প্রশাসনিক ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভবনে নেই কোনো জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তরের দেয়ালে লাগানো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোর মেয়াদ চলতি বছরের ৮ জুনে শেষ হওয়ার পরও সেগুলো রিফিল করার জন্য এখনও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও প্রক্টর অফিসের সামনের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সেগুলো এখনও রিফিল বা পরিবর্তন করা হয়নি।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিকটতম ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিফিল ডিফেন্সের ইপিজেড ও বাগিচাগাঁও স্টেশন দুটি যথাক্রমে ৮ ও ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। খানাখন্দে ভরা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী রাস্তার কারণে এই পথে আসতে ফায়ার সার্ভিসকে পড়তে হয় প্রতিবন্ধকতার মাঝে।
সম্প্রতি শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে আগুন লাগার ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এরূপ নাজুক অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে কুবি শিক্ষার্থীদের মাঝেও। তারা বলছেন যেকোনো অগ্নিকাণ্ডে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের জানমালের ক্ষতি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা থেকে বলা হয়, খুব দ্রুতই এসব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র পুনরায় ভর্তি করা হবে।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে থাকা (সহকারী রেজিস্ট্রার) মোহাম্মদ সাদেক হোসাইন মজুমদার বলেন, এগুলো রিফিল করার জন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখনো বাজেট পায়নি। শিগগিরই আমরা বাজেটের জন্য নির্দেশনা দিয়ে কাজ শুরু করবো।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব না। উপাচার্য ভালো জানেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে কথা বলতে দপ্তরে, পরে মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
এএম/