আর্কাইভ থেকে জাতীয়

কারাগারে ২ জনের পরিচয়, জামিনের পরেই ডাকাত দল গঠন করে স্বর্ণ লুট

কারাগারে ২ জনের পরিচয়, জামিনের পরেই ডাকাত দল গঠন করে স্বর্ণ লুট
অনেকটা সিনেমার চিত্রনাট্যের মতো।কারাগারে দুইজনের পরিচয়। একসময় জামিনে বের হয়ে আসেন তারা। পরে ডাকাত দল গঠন করে সোনার দোকান লুট করেন। স্বর্ণ লুটের আগে তারা নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে। এমনই বাস্তব ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলায়। উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে দুটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় সাতজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এসময় তাদের কাছ থেকে  দুই রাউন্ড গুলিসহ দেশে তৈরি ১টি এলজি,৬০ ভরি সোনা, ১৬০ ভরি রুপা, সাড়ে তিন লাখ টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ। পৃথক ঘটনায় চুরি করা চারটি গরুও তাঁদের দেওয়া তথ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার(১১ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন-শাহদাত হোসেন (৩২), সালাউদ্দিন (৩২), মিজানুর রহমান (৩৬), মো. নোমান (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩০), মো. ‍সুজন হোসেন (২৭) ও কমল কৃষ্ণ সরকার (৩২)। সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পুলিশ সুপার বলেন, রোববার(১০ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশের একাধিক দলের পৃথক অভিযানে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সোনার দোকানে ডাকাতিতে জড়িত দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন মো. শাহাদাত ও মো. মিজানুর রহমান। শাহাদাত সোনাইমুড়ী উপজেলার ও মিজানুর কবিরহাটের বাসিন্দা। দুজনের পরিচয় হয় নোয়াখালী জেলা কারাগারে। দুজন ২০১৮ সালে পৃথক মামলায় কারাগারটিতে ছিলেন। এরপর জামিনে বের হয়ে দুজন ডাকাত দল গঠন করেন। শুরুতে তাঁদের সঙ্গে দলটিতে যোগ দেন সালাউদ্দিন। তিনি বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী চৌরাস্তা এলাকার একটি ওয়েল্ডিং কারখানার মালিক। পরে দলটিতে অন্যরা যুক্ত হন।’ পুলিশ সুপার  আরও বলেন, ‘চাপরাশিরহাটে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার পর থেকে পুলিশ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, লুট হওয়া সোনা-রুপা লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা মো. নোমান তাঁর এলাকায় বিক্রির চেষ্টা করছেন। স্থানীয় সোনা ব্যবসায়ী সুজনের সহযোগিতায় কমল কৃষ্ণ নামের আরেক ব্যবসায়ীর কাছে এসব সোনা বিক্রি করা হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।’ যেভাবে ডাকাতি করে সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘শুরুতে একাধিক স্থানে ডাকাতি করতে গিয়ে দলটি ব্যর্থ হয়। গত  ১ ডিসেম্বর বেগমগঞ্জের ছয়ানী থেকে পাঁচটি গরু চুরি করে কুমিল্লায় বিক্রি করে ডাকাত দলটি। পরবর্তীতে ৬ ডিসেম্বর কুমিল্লার মুরাদনগরে দুটি সোনার দোকানে ডাকাতি করেন তাঁরা। এর পরের  দিন চাপরাশিরহাটে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ডাকাতির ১৫ থেকে ২০ দিন আগে শাহাদাত ও মিজানুর রহমান চাপরাশিরহাট বাজার রেকি করে ডাকাতির জন্য বাজারের মা-মণি জুয়েলার্সকে টার্গেট করেন। সালাউদ্দিনের দোকানে বসে পরিকল্পনা করা হয়, কে কী অস্ত্র ও সরঞ্জাম নেবেন, কে কতজন লোক আনবেন।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে ভোর চারটার মধ্যে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাত দল বাজারের পাঁচ নৈশপ্রহরীর চারজনকে হাত-পা বেঁধে ফেলেন। শহিদ উল্যাহ নামের আরেক প্রহরীকে মাথায় ভারী বস্তুর আঘাতে হত্যা করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কারাগারে | ২ | জনের | পরিচয় | জামিনের | ডাকাত | দল | গঠন | করে | স্বর্ণ | লুট