প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন দেশে গাঁজা, আফিম, কোকেনের মতো নানা মাদকদ্রব্য সেবনের প্রচলন রয়েছে। বিভিন্ন উৎসবে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে বা কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে টিনএজ অনেকেই এসব মাদকরে খপ্পরে পড়ে যায়। সাধারণত এসব মাদকদ্রব্য বিনোদন ও নেশার প্রয়োজনে ব্যবহার হলেও বর্তমানে এসব দিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘরবাড়ি। শুনতে অজব লাগলেও এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দেশে জব্দকৃত বিপুল পরিমাণ কোকেন রাখার জায়গা না পেয়ে অভিনব এ উপায়টি বের করেছে দেশটি। কোকেন চূর্ণ, বালু-সিমেন্টসহ অন্যান্য সামগ্রীর সাথে মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কংক্রিট। আর সে কংক্রিট ব্যবহার করা হচ্ছে ভবন নির্মাণে।
ইকুয়েডরে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ হয়, যার বেশিরভাগই কোকেইন। ২০২১ সালেই জব্দ হয়েছে প্রায় ২১০ টন মাদক। যা গেলো বছরের দ্বিগুণ।
সাধারণত প্রশাসন জব্দকৃত মাদক পুড়িয়ে ধ্বংস করতো এবং জমা রাখতো পুলিশের গুদামঘরে। তবে, গেলো কয়েক বছর এতো বেশি পরিমাণ মাদক জব্দ হয়েছে যা ২৭টি গুদামঘরের রাখা সম্ভব হয়নি এবং পুড়িয়ে ফেলাও দুঃসাধ্য। আর তাই, ভিন্নধর্মী চিন্তা থেকে ভবন নির্মাণে ব্যবহার হচ্ছে কোকেন।
সিমেন্ট, বালুসহ অন্যান্য সামগ্রীর সাথে কোকেন মিশিয়ে কংক্রিট তৈরি করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক সংস্থা ইউএনওডিসিকে সাথে নিয়ে এনক্যাপসুলেশন মেথডে এ কংক্রিট তৈরি করছে দেশটি।
ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব এডমুন্ডো মেরা জানান, জব্দকৃত মাদকদ্রব্যের পরিমাণ যতো বাড়বে ততোই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারীদের কাজের ঝুঁকি বাড়বে। ধ্বংস না করলে, এগুলো আবারও অপরাধীদের কাছে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে এসব মাদক একটি গর্তের মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের সাথে মেশানো হয়। এটি কংক্রিট তৈরির মতো একই প্রক্রিয়ায় করতে হয়। অনেকদিন ধরেই আমরা এ প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবছিলাম। অবশেষে সফল হয়েছি।
সাধারণত, এক টন কোকেন পোড়াতে যে সময় লাগে তার ৪ ভাগের এক ভাগ সময় লাগে কোকেনের কংক্রিট তৈরিতে।