হাড়হিম করা ঘটনা এটি! স্বামী এবং শাশুড়িকে খুন করে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। তারপরে ওই দেহাংশ রাখা হয় ফ্রিজের মধ্যে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের গুয়াহাটির নুনমাটি এলাকায়।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি প্রকাশ হয়েছে গেলো রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি)। ঘটনা শোনার পরেই ভয়ে শিউরে এবং আঁতকে উঠছেন এলাকার লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ খুনের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বন্দনা কালিতা নামের এক মহিলাকে। বিয়ের পরে একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বন্দনা। প্রেমিককে সঙ্গে নিয়েই বন্দনা ওই খুন করেন। তারপরে তাদের দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। দেহাংশ রাখা হয় ফ্রিজের মধ্যে। খুনের তিনদিন পরে সেই দেহাংশ পুঁতেও ফেলা হয়েছিল।
গুয়াহাটির পুলিশ আরও জানিয়েছে, বন্দনা তার প্রেমিক এবং আরও একজন বন্ধু সঙ্গে মিলে ওই খুন করে। তারা নৃশংসভাবে খুন করেছিলেন বন্দনার স্বামী অমরজ্যোতি দে এবং শাশুড়ি শঙ্করী দে-কে। তিনি চেয়েছিলেন স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে। এজন্য প্রেমিকের সঙ্গে খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি। এ খুনের সঙ্গে অনেকেই দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন।
জানা গিয়েছে, গেলো বছর অগাস্ট মাস থেকেই নিখোঁজ ছিলেন অমরজ্যোতি দে এবং শঙ্করী দে। বন্দনা কালিতাকে গ্রেপ্তার করার পরেই হাড়হিম করা ঘটনা জানতে পেরেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুজনকে খুন করতে বন্দনাকে সাহায্য করেছিল অরূপ ডেকা এবং ধনজিৎ ডেকা নামের দুজন। তারা ওই খুনের পরে দেহ মাটিতে পুঁতে দিতে সাহায্য করেছিলেন। বন্দনাকে গ্রেপ্তার করার পরে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাকে পানবাজার মহিলা থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গুয়াহাটির পুলিশ।
পুলিশের দাবি, জেরায় খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে বন্দনা। দুজনকে খুন করার পরে দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। তারপরে একটি ফ্রিজের মধ্যে রাখা হয় ওই টুকরোগুলি। তিনদিন পরে, অরূপ ডেকা এবং ধনজিৎ ডেকার সাহায্য নিয়ে দেহাংশ নিয়ে যাওয়া হয় মেঘালয়ে। সেখানে আলাদা আলাদা জায়গায় দেহাংশ পোঁতা হয়।
তার বয়ানের ওপর ভিত্তি করে মেঘালয় থেকে ওই দেহাংশ উদ্ধার করেছে অসমের পুলিশ। এ খুনের ঘটনা ঘটেছে ছয় মাস আগে। সেই সময়ে বন্দনা থানায় গিয়ে জানিয়েছিলেন যে তার স্বামী এবং শাশুড়ি নিখোঁজ। কিন্তু তাদের কোন হদিশ পাওয়া যায়নি।
দিন কয়েক আগে পুলিশ জানতে পারে, শঙ্করী দের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়। এ নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বন্দনার আচরণ এবং কথাবার্তায় তাদের সন্দেহ হয়। তারপরে তাকে জেরা করতেই আসল তথ্য জানা যায়। এ খুনের ঘটনায় অরূপ ডেকা এবং ধনজিৎ ডেকাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।