ইয়াবার গডফাদার স্কুলশিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীনকে (৪২) দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত এলাকায় তার। এ শিক্ষকই ইয়াবা সাম্রাজ্যে পরিচিত দুলাভাই নামে! তার আসল নাম কেউই জানত না। এমনকি তার চেহারাও কখনও কেউ দেখেনি। শুধু একটি মোবাইল ফোন নম্বরই ছিল তার পরিচয়।
গতকাল গভীর রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট মোড় এলাকা থেকে ইয়াবার এ গডফাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে আরও দুই সহযোগীকে ধরা হয়। উদ্ধার করা হয় ২১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা ও নগদ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
জয়নাল কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানার জুলহারপাড়া গ্রামের মো. সিদ্দিক আহমেদের ছেলে। বাকি দুজন হলেন- তার শ্যালক মো. মোবারক হোসেন (২৭) ও মো. রেজাউল করিম দিদার (৩১)।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (পশ্চিম) পংকজ দত্ত বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতে দেওয়ানহাট মোড়ের মুম্বাই সুইটস দোকানের সামনে থেকে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ-দুলাভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুই সহযোগী এবং ২১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা ও সাড়ে আট লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, জয়নাল আবেদীন ইয়াবার গডফাদার। তাকে সবাই চেনে দুলাভাই নামে। চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবার অন্যতম প্রধান জোগানদাতা তিনি। তার নাম কেউ জানে না, কেউ কখনও দেখেওনি তাকে। শুধু একটি মোবাইল নম্বরই ছিল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার পরিচয়। সেই নম্বরে ফোন করলেই তিনি ইয়াবা নিয়ে হাজির হতেন। ইয়াবা দিয়ে সেই নম্বর আবারও পাল্টে ফেলতেন। দুই দিন আগে প্রায় ২২ হাজার পিস ইয়াবাসহ চালক-হেলপারকে গ্রেপ্তারে পর উঠে আসে এই দুলাভাইয়ের নাম।
ওসি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতে দেওয়ানহাট মোড়ে ১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবাসহ তাকে ধরা হয়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন হাজীরপুল এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে তার বাসার আলনার নিচে লুকিয়ে রাখা একটি শপিং ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় আরও ২০ হাজার ইয়াবা।
তিনি বলেন, ইয়াবার গডফাদার হলেও তার ইয়াবা কারবারের ঘটনা এলাকাবাসী জানে না। এলাকায় তিনি স্কুলশিক্ষক হিসেবে পরিচিত। তিনি কুরুসকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। কিন্তু এর আগেও একবার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন তিনি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ- ওরফে দুলাভাই জানান, তিনি মূলত কক্সবাজার থেকে ইয়াবা এনে নিজের কাছে মজুত করেন। এরপর তা সারাদেশে বিক্রি করে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
মুক্তা মাহমুদ
