আর্কাইভ থেকে এশিয়া

কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক, দাম দশ গুণ বেশি!

কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক, দাম দশ গুণ বেশি!

আবারো আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালেবান। রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই বদলে যেতে থাকে দেশটির পরিস্থিতি। এখন প্রায় বদলে গেছে রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবনযাত্রা সবই।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, তালেবানের আফগান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও সংবাদমাধ্যমের যতটা উদ্বেগ, তার থেকে বেশি উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে দেশটিতে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে। দখল করা এলাকাগুলোয় নারীর অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে আগেই জানিয়েছিল জাতিসংঘ।

বলা হচ্ছে, নারীদের কোনো অধিকারই প্রতিষ্ঠা হতে দেবে না তালেবান। বিশেষ করে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। একইসঙ্গে বাড়তে পারে বাল্যবিবাহের হার। তালেবানদের কাবুল দখলের পর থেকেই আতঙ্ক আরও বহুগুণ ছড়িয়ে পড়েছে সেখানকার নারীদের মধ্যে।

এরইমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমধ্যম জানিয়েছে, কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। বোরকার দামও বেড়ে গেছে আট থেকে দশ গুণ। গেল বছর যে বোরকার দাম দুইশ আফগানি মুদ্রা ছিল, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার আফগানি মুদ্রায়।

তালেবান ফিরে আসার খবরে সতর্ক হয়ে গেছে দেশটির তরুণী থেকে বৃদ্ধা সবাই। নিজেদের বোরকার মজুদ বাড়ানো শুরু করেছে জানা গেছে।

এতোদিন শুধু আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের নারীরাই বোরকা পড়ত। কিন্তু তালেবান কাবুল ঘিরে ফেলার পর থেকেই বোরকা কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় করছে সেখানকার নারীরা। ক্রেতা বেড়ে যাওয়ায় বোরকার দামও বেড়ে গেছে।

বহুদিন আগে থেকেই আফগানি বোরকা বিশ্বে ঐতিহ্যবাহী। এ বোরকা আফগান নারীদের পরিচয় বহন করে আসছে বলা হয়ে থাকে। ওই বোরকার আদলে ‍বোরকা পাওয়া যায় মুসলিম অধ্যুষিত বিশ্বের বহু দেশে।

ঐতিহ্যবাহী বোরকাগুলো বেশিরভাগ সময় নীল রঙের হয়ে থাকে। ভারী কাপড়ে বানানো এই বোরকা এমন ভাবে নকশা করা হয় যেন পরিধানকারীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা থাকে। বোরকার চোখের কাছে থাকে পাতলা জালের মতো কাপড়। যা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে পান পরিধানকারীরা। কিন্তু বাইরের কেউ তাকে দেখতে পাবে না।

১৯৯০ এর দশকে তালেবান সরকার যখন ক্ষমতায় বসে তখন কড়াকড়িভাবে এ ধরনের বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে যাওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। কেউ নির্দেশ না মানলে তালেবানের নৈতিক পুলিশের হাতে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের নির্মম শাস্তি পেতে হতো।

২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত কারণে অনেকে বোরকা পরা অব্যাহত রাখে। আবার বহু নারীই তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে চলতি বছর আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর তালেবান নিয়ন্ত্রণে নিলে পরিস্থিতি বদলে যায়।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কাবুলে | বোরকা | কেনার | হিড়িক | দাম | দশ | গুণ | বেশি