ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আপত্তিকর অবস্থায় এক প্রেমিক যুগলকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে এ ঘটনা ঘটে। পরে উভয়ের অভিভাবকের সাথে কথা বলে লিখিত মুচলেকা নিয়ে প্রেমিকাকে অভিভাবকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া প্রেমিককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আটক হওয়া প্রেমিক যুগলের প্রেমিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। এছাড়া প্রেমিকা ইডেন মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী বলে জানা গেছে। তার বাড়ি খুলনার জেলায়।
সূত্র জানিয়েছে, প্রেমিকের বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইডেন কলেজের ওই মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনে সহযোগিতা করে। পরে ফেসবুকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিকের বন্ধুর বাড়ি প্রেমিকার এলাকায় বলে জানা গেছে। ওই প্রেমিকা সম্প্রতি ইডেন কলেজ থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় গুচ্ছে ভর্তি সংক্রান্ত কাজে।
পরে প্রেমিকের আহ্বাানে গত ৪ মার্চ ইবি ক্যাম্পাসে আসে প্রেমিকা। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে বিভাগের এক ছোটবোনের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) কাছে রাখে প্রেমিক। প্রতিদিন ঘোরাঘুরি শেষে সন্ধ্যায় তাকে হলে দিয়ে আসেন প্রেমিক বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের ব্রিজের কাছে একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন ওই প্রেমিক যুগল। এসময় আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায় তাদের। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি দেখে আওয়াজ তুললেও তারা একই অবস্থায় সেখানে অবস্থান করে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে সংবাদ দেন তারা। তাৎক্ষণিক তিনি সেখানে এসে একই অবস্থা দেখতে পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে অবহিত করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা ড. আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থলে যান এবং তাদেরকে গাড়িতে নিয়ে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান।
পরে সেখানে প্রেমিক ও প্রেমিকার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন তিনি। একপর্যায়ে অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে তাদের থেকে লিখিত মুচলেকা নিয়ে মেয়েকে অভিভাবকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন, সহকারী প্রক্টর ও প্রেমিকের বিভাগের শিক্ষক শাহেদ আহমদ, শাহবুব আলম, জয়শ্রী সেন ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তার ফোন পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। পরে মেয়েকে তার অবিভাবকের সাথে কথা বলে তাদের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়েছে। আর ছেলেকে তার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে প্রেমিকের বিভাগের শিক্ষক ও বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকা শাহেদ আহমেদ বলেন, বিভাগের জিম্মায় কাউকে দেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, ছেলে-মেয়ের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে মেয়েকে তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই ছেলে সহ যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অফ কন্ডাক্ট ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় লেকের পাশে পাটক্ষেত থেকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে। এছাড়া এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের তৃতীয় তলার টয়লেটে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক যুগল।