খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির কবলে পড়তে পারে। প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ক্রিয়াশীল লঘুচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর এই ঝড় ও বজ্রপাতের বিশেষ আশঙ্কা রয়েছে।
কানাডাভিত্তিক এক আবহাওয়াবিদের পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
মোস্তফা কামাল পলাশ নামের ওই আবহাওয়াবিদ বলেন, আজ রাত ৯টার পর থেকে খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর ওপর দিয়ে ব্যাপক শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়, তীব্র বজ্রপাত বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এই ঝড় খুলনা বিভাগের সকল জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে ঢাকা বিভাগের পদ্মা নদীর অপর পারের সকল জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রচারের অনুরোধ করে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পিএইচডি গবেষক বলেন, সম্ভব হলে অনুরোধ করব বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে উপরোক্ত সংবাদটি প্রচার করে খুলনা বিভাগের বিশেষ করে, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা, নড়াইল, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও খুলনা জেলার মানুষদের সাবধান করে দেয়ার জন্য।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে জানান, পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ঝড় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। এটি এই মুহূর্তে কলকাতায় রয়েছে। রাত ১০টা নাগাদ এটি খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে প্রবেশ করতে পারে।
তিনি আরও জানান, ঝড়ের সঙ্গে মূলত বজ্রপাত হতে পারে। সেই সঙ্গে জোরে বাতাসও বইতে পারে, তবে ঝড়টি কতটা শক্তিশালী হবে, তা স্পষ্ট নয়।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাসহ সারা দেশেই ঝড়-বৃষ্টি ও কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে আট অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আবহাওয়াবিদ এসএম নাজমুল হক বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সব বিভাগেই কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। ঢাকায় সহসাই ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নদীবন্দরগুলোর আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এছাড়া মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।