আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

নিয়ম বহির্ভূতভাবে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটি গঠনের অভিযোগ

নিয়ম বহির্ভূতভাবে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটি গঠনের অভিযোগ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। সোমবার (০৩ এপ্রিল) মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির দায়িত্বে থাকা সভাপতি-সেক্রেটারী সিরাজুল, শহিদুল, বাচ্চা, মাহফুজার যৌথ স্বাক্ষর করে তারা এ অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নির্দিষ্ট কর্ম এলাকার বাইরে থেকে কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমিতির নিজ কর্ম এলাকার বাইরের লোকজন দিয়ে কমিটি গঠন করায় স্থানীয় মৎস্যজীবীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কর্ম এলাকার বাইরে রাজাহার গ্রামের মো. ফারুক ধনিয়াল গ্রামের আমির হোসেন আমু, দক্ষিণ বরাট্ট গ্রামের আবু মুসা, আব্দুল মান্নান ও আনোয়ার হোসেনকে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটির সভাপতি/সম্পাদক করা হয় যা নিয়ম বহির্ভূত। এরমধ্যে উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের (বড়শাঁও) নিজ কর্ম এলাকার বাইরে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুর থেকে বড়শাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়া ২০২২ সালের সদস্য সংখ্যা ছিল ২০জন। কিন্তু ২০২৩ সালে কর্ম এলাকার বাইরে অনিয়ম করে বাড়িয়ে ২৫ জন সদস্য করা হয়। রাজাহার ইউনিয়নের রুপালী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর (বানেশ্বর-নিচকিনচাপড়) রাজাহার গ্রামে রুপালী মৎস্যজীবী সমিতি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে রাজাবিরাট (বরট্ট) গ্রাম এলাকা থেকে সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছে। ২০২২ সালে ওই সমিতির সদস্য সংখ্যা ছিল ২০ জন। ২০২৩ সালে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২৩ জন করা হয়। একই ইউনিয়নের গোয়ালিনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর (ঝিকরাইল) কুকরাইল গ্রাম থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরের ব্যক্তিদের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়েছে। কামদিয়া ইউনিয়নের পাড়াবড়গাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর (পাড়াবড়গাঁও, কাঁচের চড়া) গ্রামে একইভাবে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে (মহিষমুড়ি, ছাতিয়ানচুড়া) সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। শাখাহার ইউনিয়নের খুরশাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ খুরশাল গ্রামেও ৪  কিলোমিটার দুরের আলীগাঁও গ্রামের ব্যক্তিদের সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। এছাড়াও নিচকিনচাপড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, ধর্মপুর পশ্চিমপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ, বেউরগ্রাম মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিঃ ও গোয়ালিনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ সহ আরও একাধিক সমিতি একই কায়দায় কর্ম এলাকার বাইরে সভাপতি ও সম্পাদকসহ সদস্য নির্বাচন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় অভিযোগকারীরা উক্ত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটি বাতিল করে নিয়ম মাফিক কমিটি গঠনের দাবী জানান। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা সমবায় অফিসার এ এইচ এম তারিকুল শরীফ সুকৌশলে টাকার বিনিময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজ কর্ম এলাকার বাইরের ব্যক্তিদের নিয়ে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটি গঠন করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য বলেন, সমবায় অফিসার কমিটি বাণিজ্য করেছেন। প্রতিটি কমিটির বিপরীতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা তিনি নিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে সুবিধা পেলে কি কেউ মুখ খুলবে। তদন্ত করলেই অনিয়মের বিষয়ে সবকিছু জানা যাবে। এ উপজেলায় দুই শতাধিক সরকারি খাস পুকুর রয়েছে। কমিটি গঠনের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা সমবায় অফিসার এ এইচ এম তারিকুল শরীফ বলেন, জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তারাই সমিতির কমিটি গঠন করে থাকেন। আমার দায়িত্ব হচ্ছে সমিতির টাকা-পয়সা সংক্রান্ত খাতাপত্র ও হিসাব পরীক্ষা করা। অনিয়মের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে কমিটি বাতিল করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, উক্ত বিষয়ে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা সমবায় অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আনিছুর রহমান  বলেন, নিজ কর্ম এলাকার বাইরের লোকজন দিয়ে মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কমিটি গঠন করার কোন সুযোগ নেই। এমন হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন নিয়ম | বহির্ভূতভাবে | মৎস্যজীবী | সমবায় | সমিতির | কমিটি | গঠনের | অভিযোগ