আর্কাইভ থেকে জনদুর্ভোগ

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, বৃষ্টির অপেক্ষায় ব্যাকুল মানুষ

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, বৃষ্টির অপেক্ষায় ব্যাকুল মানুষ
দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম জুড়ে গেল কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপ প্রবাহে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। কড়া রোদ ও তাপমাত্র পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকায় মানুষের হাঁসফাঁসের পাশাপাশি প্রাণীকুলেও পড়েছে চরম বিরম্ভানায়। বিশেষ করে রমজান মাস হওয়ায় রোজাদার ব্যক্তিসহ দিনমজুর এবং কৃষি শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছেন। নীল আকাশের বাতাসও থমকে আছে। সাধারণ মানুষদের দিনে-রাত ঘাম ঝরানো যন্ত্রণার মাঝেও নেই স্বস্তির নিঃশ্বাস। অন্যদিকে খেটে খাওয়া মানুষগুলো প্রচন্ড গরমের মাঝেও জীবন-জীবিকার তাগিদে চড়া রোদেও কাজ করছেন। শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষ ও প্রাণীকুলে নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রখর রোদের মাঝে একটু প্রশান্তি পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক। এ কারণে গরমের তীব্রতা আরও অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তীব্র এই গরমে বের হতে না পাড়ায় আয় কমেছে খেটে খাওয়া মানুষদের। পরিবার-পরিজনদের নিয়ে চরম দুর্দিন কাঁটাছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। এ রকম কড়া আবহাওয়ার থাকায় ভাইরাস জ্বর-শ্বর্দি,পেটের পীড়া ও জলবসন্তসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে অনাবৃষ্টি ও সঠিক সময়ে সেচ দিতে না পাড়ায় প্রচন্ড তাপদাহে রবি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ভ্যান চালক মোকছেদ আলী (৬০) ও হাক্কু মিয়া জানান,আগে সারাদিন থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হতো। সেই অর্থ দিয়ে কোন রকমইে সংসার চলতো তাদের। রমজান মাস আসায় ক্ষ্যাপ (ভাড়া) কমেছে। এরপরও কড়া রোদ থাকায় রোজা রেখেও ক্ষ্যাপ মারা খুবই কষ্টকর। তবুও পরিবারের সদস্যদের দু-মুঠো খাবার সংগ্রহ করার জন্য প্রচণ্ড রোদের বেড়িয়ে পড়েছেন। ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষক সিদ্দিক মিয়া জানান, প্রচন্ড রোদের মধ্যেও তিনি কষ্ট করে জমিতে কাজ করছেন। তার মতো অনেক কৃষক ও কৃষি শ্রমিকও তীব্র গরম কষ্ট সহ্য করে কাজ করেন। পাশাপাশি একটু স্বস্তির বৃষ্টির অপেক্ষায় ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগাড়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, আজ বিকেল তিনটায় কুড়িগ্রাম জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৭২ ঘণ্টা এ তাপমাত্র অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সুমন কান্তি সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে জ্বর-স্বর্দি ও ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন। তবে এখনো তেমন রোগীর সংখ্যা বাড়েনি। তারপরেও আমরা প্রস্তুত আছি। প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি করে ডাবের পানিসহ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধের বাড়তি যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন তীব্র | তাপদাহে | অতিষ্ঠ | জনজীবন | বৃষ্টির | অপেক্ষায় | ব্যাকুল | মানুষ