কবি বেগম সুফিয়া কামাল যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন।
শনিবার (২০ নভেম্বর) কবি বেগম সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) দেয়া এক বাণীতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কবির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি সুফিয়া কামালের সাহিত্যে সৃজনশীলতা ছিল অবিস্মরণীয়। শিশুতোষ রচনা ছাড়া দেশ, প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সমাজ সংস্কার ও নারীমুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার লেখনী আজও পাঠককে আলোড়িত এবং অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, সুফিয়া কামাল ছিলেন একদিকে আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি, মমতাময়ী মা। অন্যদিকে বাংলার প্রতিটি আন্দোলন, সংগ্রামে ছিল তার আপসহীন ও দৃপ্ত পদচারণা। ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১ এর অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামসহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ উপস্থিতি ছিল। সেই স্বীকৃতিতে তাকে জনগণের ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে অভিষিক্ত করা হয়েছে।
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার চিন্তধারা কবি সুফিয়া কামালের জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সুফিয়া কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা হোস্টেলকে ‘রোকেয়া হল’ নামকরণের দাবি জানান। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করলে এর প্রতিবাদে গঠিত আন্দোলনে যোগ দেন। কবি শিশু সংগঠন ‘কচি-কাচার মেলা’ প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নামে ছাত্রী হল নির্মাণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ’৭৫ এর ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর এদেশের ইতিহাস বিকৃতির পালা শুরু হয়। তখনও কবি সুফিয়া কামালের সোচ্চার ভূমিকা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নতুন প্রেরণা যুগিয়েছিল।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সুফিয়া কামালের জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। কবির ভাষায়-‘তুলি দুই হাত, করি মোনাজাত হে রহিম রহমান/কত সুন্দর করিয়া ধরণী মোদের করেছ দান/গাছে ফুল ফল, নদী ভরা জল, পাখির কণ্ঠে গান, সকলি তোমার দান’।
প্রধানমন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এস
