গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রথমবারের মতো আবদ্ধ পরিবেশে প্রাকৃতিকভাবে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে ম্যাকাও। এর আগে বাংলাদেশের কোথাও ম্যাকাও পাখির বাচ্চা ফোটানোর ঘটনা ঘটেনি। দাবি করেছেন বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতির সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক এবং সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ইমরান আহমেদ।
রোববার (২১ মে) প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তিনি। সাফারি কিংডমের ভেতরে অবস্থিত পাখিশালায় বিশাল জায়গাজুড়ে ছাউনির নিচে বিভিন্ন প্রজাতির ম্যাকাও পাখির বাস। সেখানে বিশেষভাবে তৈরি বেশ কিছু বড় বড় বাক্স স্থাপন করা। ম্যাকাও পাখিগুলো এসব বাক্সের ভেতর বসবাস করে।
সাফারি পার্ক সূত্রে জানা যায়, ম্যাকাও পাখির বসতি মূলত দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন বনে। ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল, বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে, পেরুর বনাঞ্চলে এই পাখি দেখা যায়। বাংলাদেশে বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র ও ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে ম্যাকাও পাখি লালন-পালন করেন। ম্যাকাও পাখি সাধারণত ফলমূল ও বিভিন্ন বীজ-জাতীয় খাবার খায়। ম্যাকাও বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে।
বন্য প্রাণী-বিশেষজ্ঞরা জানান, ম্যাকাও পাখি আবদ্ধ পরিবেশে ৩০ থেকে ৫০ বছর বাঁচার নজির আছে। তবে প্রকৃতিতে এদের জীবনকাল ২০ থেকে ২৫ বছর। আন্তর্জাতিক বাজারে এ ধরনের পাখির একেকটির দাম ১ লাখ থেকে ৪ লাখ পর্যন্ত হয়। এই পাখিগুলোর দৈর্ঘ্য ৩০ থেকে ৩৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। একেকটি পাখির ওজন ৯০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। ম্যাকাও পাখি সাধারণত মরা গাছের কোটরে বাসা বানায়। এরা একসঙ্গে দুই থেকে তিনটি ডিম পাড়ে। ২৬ থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত মা ম্যাকাও পাখি ডিমে তা দেয়। এরপর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এসব পাখির প্রজননের জন্য খুবই নিবিড় ও তাদের অনুকূল পরিবেশ দরকার পড়ে।
বন্য প্রাণী ও প্রকৃতির সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ইমরান আহমেদ বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো ম্যাকাও পাখির ছানার জন্ম হওয়ায় আমরা পার্ক-সংশ্লিষ্টরা সবাই খুশি। ছানার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে বলেছি। আমরা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে উৎসাহিত হয়েছি।