ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিস্ফোরণে বিশাল একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর সেখানকার হাজার হাজার মানুষ পানীয় জলের তীব্র সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
বুধবার (৭ জুন) দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে পড়েছেন।
বিবিসির দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জেলেনস্কি বলছেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল বিভক্তকারী নিপ্রো নদীর বন্যার পানিতে খেরসন অঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষ আটকা পড়েছেন। আশপাশের কয়েকটি এলাকা সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।
সেখানকার সেচ ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার ফলে কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে লড়াইয়ে নোভা কাখভকা বাঁধকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছে।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বলেছে, বাঁধ ধ্বংসের ঘটনায় জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েনি। বুধবার বন্যার পানির উচ্চতা বাড়তে পারে আশঙ্কায় খেরসনের আশপাশের এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।
গেলো বছরের শেষের দিকে রুশ বাহিনীর হাত থেকে খেরসন শহরের নিয়ন্ত্রণ উদ্ধার করেছিল ইউক্রেনীয় বাহিনী। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ৪২ হাজার মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ইউক্রেন সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউস বর্তমানে শহরটিতে অবস্থান করছেন। তিনি বলেছেন, বন্যার পানিতে অনেক বাড়ির ছাদ পর্যন্ত ডুবে গেছে। উদ্ধারের অপেক্ষায় খেরসনের অনেক মানুষ ছাদ ও গাছে রাত কাটিয়েছেন।
কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, নোভা কাখভকাতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। কাখভকা জলাধারে পানি কমে আসার ফলে তা দক্ষিণ ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি শিল্পের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ বিশাল এলাকাটি সেচের পানির ওপর নির্ভরশীল।
দূষণ এবং বন্যার কারণে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের সরকার। এই পরিস্থিতিকে গত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপে সবচেয়ে খারাপ পরিবেশগত বিপর্যয়গুলোর একটি হিসাবে বর্ণনা করেছে ইউক্রেন।
অন্যদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বলেছে, বন্যায় অন্তত সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন।