এবার স্বামীর বিপরীতে লড়ছেন তার প্রাক্তন স্ত্রী। এ লড়াই বগুড়ার তালোড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের জন্য। দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুল জলিল খন্দকারের ভোটযুদ্ধে প্রতিপক্ষ হয়েছেন তারই প্রাক্তন স্ত্রী আউলিয়া খন্দকার। একই পদে স্বামী ও প্রাক্তন স্ত্রীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। দুজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বেশ জমে উঠেছে।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,আগামী ২১ জুন তালোড়া পৌরসভা নির্বাচন। এতে মেয়র পদে ৬ জন, কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন ১২ জন প্রার্থী। মেয়র পদে ৬ প্রার্থীর মধ্যে দুজন হলেন স্বামী ও সাবেক স্ত্রী।
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র আব্দুল জলিল খন্দকার লড়ছেন জগ প্রতীকে এবং তার সাবেক স্ত্রী আউলিয়া খন্দকার লড়ছেন ইস্ত্রি প্রতীক নিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তালোড়া পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল খন্দকার ও আউলিয়া খন্দকারের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ২০১৯ সালে। বিচ্ছেদের পর অন্য মেয়েকে বিয়ে করে সংসার করছেন আব্দুল জলিল। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ব্যবসা করছেন। এদিকে বিচ্ছেদের পর আউলিয়া খন্দকার পৌরসভার লাফাপাড়া মহল্লায় একটি আশ্রম গড়ে তুলে মায়ের সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন।
আব্দুল জলিল খন্দকার বলেন, গত ২০১৩ সালে তালোড়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তী নির্বাচনে হেরে গেলেও জনগনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এবারের নির্বাচনে জনগন তার সাথে আছে। এছাড়া সাবেক স্ত্রীর নির্বাচনে অংশগ্রহণে তার ভোটের মাঠে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানান তিনি।
ভোটযুদ্ধে আব্দুল জলিল খন্দকারের প্রতিদ্বন্দ্বী তার প্রাক্তন স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী আউলিয়া খন্দকার বলেন, সাধারণ মানুষ জনপ্রতিনিধির কাছে ভালো ব্যবহার প্রত্যাশা করেন। সেরকম প্রার্থীই সবাই চান। আমি মেয়র হলে সরকারি চাল নিতে গরিবদের লাইনে দাঁড়াতে হবে না। প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেব। এছাড়া আমার বাবা শেখ আফতাব উদ্দিন ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছেন। আমি নিজেও ২০১৩ সালের নির্বাচনে মেয়রপদে নির্বাচন করেছি। তবে সেসময় আমার স্বামীর কারণে আমি সেভাবে ভোটের মাঠে কাজ করিনি। এবার ছেলের পরীক্ষার জন্য প্রচারণায় দেরিতে মাঠে নেমেছি। তবে মাঠ ঘুরে আমার বিজয়ের সম্ভবনা দেখছি।
এছাড়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন লড়াই করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২৫ মে মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে ২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। গত ২ জুন ৬ জন মেয়র পদপ্রার্থী, ১২টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩টি সংরক্ষিত আসনে ১২জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু পরিবেশে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা করছেন। এখন পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। আগামী ২১ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনে ১৬ হাজার ৭৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার আট হাজার পাঁচ ও নারী ভোটার আট হাজার ৭১ জন।