আর্কাইভ থেকে বিএনপি

পল্টনের জনসমুদ্র জনগণের পক্ষ থেকে ‘সতর্ক বার্তা’ : রিজভী

পল্টনের জনসমুদ্র জনগণের পক্ষ থেকে ‘সতর্ক বার্তা’ : রিজভী
পল্টনের জনসমুদ্র জনগণের পক্ষ থেকে ‘সতর্ক বার্তা’। গণপরিবহন বন্ধ করেও পল্টনের দিকে ছুটে আসা মানুষকে আটকানো যায়নি। শুধু তাই নয়, সমাবেশকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করেই ক্ষান্ত হয়নি, এটির প্রচারে সরকার মারাত্মক হস্তক্ষেপ করেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোটা পল্টন এরিয়ায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক এর ফ্রিকোয়েন্সি ছিল না। টেলিভিশনে সমাবেশের সংবাদ লাইভ প্রচার করতে নিষেধ করা হয়। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের বাড়িতে অবরুদ্ধ করাসহ গাবতলী, আমিনবাজার, গাজীপুর, ধামরাই, টঙ্গী, কালিগঞ্জ সড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকা, মাওয়া-কেরানীগঞ্জ মহাসড়কে ঢাকার প্রবেশদ্বারে তল্লাশী চৌকি বসানো হয়। এসব এলাকা থেকে অসংখ্য যানবাহন আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নেতাকর্মীরা ঢাকায় ঢোকার সময় গ্রেপ্তার করা হয়। এতে শুধু বিএনপি নেতাকর্মীই নয়, রোগীসহ সাধারণ মানুষও চরম হয়রানির শিকার হয়। এরপরও জনতার পল্টনমূখী প্রবল স্রোতকে প্রতিহত করতে পারেনি সরকার। বিএনপি নেতাকর্মীদের আক্রান্ত করা হলেও তাদের উদ্যমে দমাতে পারেনি অবৈধ সরকারের চ্যালা-চামুন্ডারা। তিনি আরও বলেন, সরকারী শত বাধা বিপত্তি, আওয়ামী পান্ডাদের সন্ত্রাসী হামলা, পুলিশী গ্রেফতার ও ঝড়—বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে জনগণ, সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং গণমাধ্যমের সাংবাদিকসহ সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। শুধুমাত্র দুর্নীতির কারণে দেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙ্গে পড়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ডেঙ্গুজ্বরে সারাদেশ কাঁপছে, প্রতিদিন লাশের সারি দীর্ঘায়িত হলেও এ বিষয়ে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। অথচ এই রোগ শতকরা একশত ভাগ প্রতিরোধযোগ্য। সরকারের অবহেলা এবং উদাসীনতায় এটি এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। প্রায় সারাদেশেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে একদিনে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ও সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। রিজভী বলেন, মশক নিধনে সিটি করপোরেশনের বাজেট লুটে খাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। মাঝে মাঝে ড্রোন এবং ফগার মেশিন দিয়ে ফটোসেশন করা হচ্ছে। মূলত: মশকনিধনে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, ডেঙ্গু জ্বর হলে দ্রুত যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার সেটিও নিতে পারেনি সরকার। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি এক ধরনের ক্রোধ থেকে শেখ হাসিনার মনে প্রত্যহ জন্ম নেয় প্রতিহিংসা। তিনি রাষ্ট্রযন্ত্রকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের ওপর ব্যবহার করেও শেষ রক্ষা করতে পারবেন না। কারণ আইন, আদালত, প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সবকিছুকে হাতের মুঠোয় নিয়েও গণতন্ত্রকামী জনগণকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের অঙ্গিকার কখনওই নিস্ফল হয়নি। নানা কালাকানুন প্রনয়ন করেও জনগণকে বন্দী করে রাখা যায় না। যদিও এখনও চলছে কালাকানুন প্রনয়নের খেলা। সর্বশেষ অত্যাবশকীয় পরিষেবা বিল পাশ করার অপচেষ্টার দ্বারা শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার হরণের চক্রান্ত চলছে। তবে জনস্বার্থ নয়, স্বৈরশাহীর একমাত্র আরাধ্য হচ্ছে বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকা। আর সেজন্য এরা বিশ্বাস করে অশান্তি, হিংসা আর হানাহানি। এ সময় তিনি গত কয়েকদিনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তার তালিকা তোলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম, আসাদুল করিম শাহীন, আমিনুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন পল্টনের | জনসমুদ্র | জনগণের | পক্ষ | সতর্ক | বার্তা | | রিজভী