বাংলার ক্রিকেটে অবিসংবাদিত নেতা মাশরাফি। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে রাঙিয়েছে তিনি। অধিনায়কত্বের ঢাল দিয়ে দেশকে চিনিয়েছেন বিশ্ব দরবারে। মাঠে মাশরাফির উপস্থিতি যেমন সতীর্থদের বাড়তি সাহস যোগায় তেমনি প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাসের কারণও হয়ে দাঁড়ায়। যেমনটা হলো মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি)। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরে নিজের প্রথম ম্যাচটি খেলেছেন তিনি। মিনিস্টার ঢাকার হয়ে মিরপুরের সবুজ গালিচায় ৪০২ দিন পর মাঠে নেমেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।
ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। এদিকে বয়স ৩৮ পেরিয়েছে। ফিটনেসও আগের মতো ছিল না। এতোকিছু মোকাবিলা করে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে পারফরর্ম করা চাট্টিখানি কথা নয়। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজা তো কঠিন চ্যালেঞ্জ জেতেন বরাবরই, এবারও তাই হলো।
সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা।ম্যাচের ১৫তম ওভারে নামতে হয় তাকে। ২ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে ফিরেছেন সাবেক এই অধিনায়ক। এক বছরেরও বেশি সময় পর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে ফিরলেন ম্যাশ। ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে জেমকন খুলনার হয়ে সবশেষ মাঠে নেমেছিলেন মাশরাফি।
কথা ছিলো এবারে আসরে আরো আগেই মাঠে নামবেন তিনি। কিন্তু হলো না তার। টুর্নামেন্ট শুরুর তিনদিন আগে অনুশীলনের সময় কোমরের পুরোনো চোট তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেয়নি মাঠে। যার জন্য নিতে হয়েছে ব্যথানাশক ইনজেকশন। সে চোটের কারণে অপেক্ষার পালা বেড়ে যায় সাবেক অধিনায়কের। তবে হার না মানা মনের অদম্য জোরে লড়াই চালিয়ে জয়ী হয়েই মাঠে ফেরেন চিত্রানদীর পাড়ে বেড়ে ওঠা ম্যাশ।
মনের জোরে জয়ী হয়েছেন তিনি। কিন্তু দল পারেনি জয়ী হতে। সিলেটের কাছে সাত উইকেটের বড় পরাজয় ঢাকার। কিন্তু মাঠে নেমে উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তাও জোড়া উইকেট।ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই হাতে বল তুলে নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এক চার ও তিন সিঙ্গেলে নিজের প্রথম ওভারে দিয়েছেন ৭ রান। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারে দলকে প্রথম সাফল্য পাইয়ে দেন নড়াইল এক্সপ্রেস। বিপজ্জনক হতে যাওয়া ক্যারিবিয় ব্যাটার সিমন্সকে ফেরান ম্যাশ।
জয়ের দিকেই যাচ্ছিলো মোসাদ্দেকের দল সিলেট। দীর্ঘদিন পর দারুণ খেলছিলেন আনামুল হক বিজয়। অর্ধশতকের কাছাকাছি এই ব্যাটার। কিন্তু স্বপ্নের ৫০ আর ছোঁয়া হলো না তার। ম্যাশের দ্বিতীয় শিকার হোন জাতীয় দলের এ ওপেনার।
দল হারলেও মাশরাফির উইকেট প্রাপ্তি যেন সমর্থকদের জন্য অন্যরকমের ভালো লাগা। যিনি বারবার ইনজুরিতে পড়েও বাইশ গজে ফিরেছেন বীরদর্পে। নিজের চিরকাল পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও খেলার মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, ইনজুরির সাথে হয়নি যার কখনো কোনো আপোষ, তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক বিবর্তনের মহানায়ক ও কারিগর।
হাসিব মোহাম্মদ