আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে ঠাণ্ডায় কাহিল নদী পাড়ের মানুষ

কুড়িগ্রামে ঠাণ্ডায় কাহিল নদী পাড়ের মানুষ

প্রচণ্ড শীতে কাবু নদ-নদীময় জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। মাঘের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে তীব্র হচ্ছে শীত ও বাতাসের প্রকোপ। শীত ও হিমেল হাওয়ায় চরম দূর্ভোগে পড়েছে চরা ল এবং নদীপাড়ের  মানুষ। সেই সাথে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।

আজ শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে শীত কমলেও বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডায় কাহিল এ জনপদের মানুষ।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যাবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, এ জেলার উপর দিয়ে মাঝারী মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সকাল ৯ টায় পরিমাপ করা হয়েছে ৬ পয়েন্ট ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরকম অবস্থা আরোও কয়েকদিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।   

শীতের তীব্রতা বাড়ায় চরম কষ্টে পড়েছে জেলার ধরলা, দুধকুমার, গঙ্গাধর ও ব্রহ্মপুত্রসহ ১৬টি নদ-নদীর চরা ল ও নদী পাড়ে বসবাসকারী মানুষ। পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েছে জেলার হাজারো দিনমুজুর, পাথরভাঙ্গা শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, মাটিকাটা শ্রমিক, অটো রিক্সাচালক, মুটে শ্রেণীর শ্রমজীবী।

নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের দুধকুমার নদের আয়নালের ঘাটের নৌকার মাঝি মালেক মিয়া জানান, মধ্যরাত পর্যন্ত নৌকা চালাতে হয় তাদের। নদীতে বাতাশ আর কুয়াশায় প্রচন্ড ঠাণ্ডা লাগে। শীতে অনেক কষ্ট করতে হয় তাদের। বল্লভের খাষ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকার গঙ্গাধর নদের পাড়ে বসবাসরত জেলে পাড়ার বাসিন্দা নগেন চন্দ্র বিশ্বাস, হরিপদ বিশ্বাস, ছায়া রাণী জানান, ভাঙ্গাচোরা ঘরের ফাঁকফোকর দিয়ে শীতল বাতাস ঢুকে  রাতের ঘুম নষ্ট করে দেয়। সকালে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করেন তারা। শীত থেকে বাঁচতে গরম কাপর নেই তাদের।

ফুলবাড়ী নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরগোরকমন্ডল এলাকার কৃষি শ্রমিক ছাইদুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। সকাল সকাল চাষের মাঠে কাজ করতে যেতে হয়। কয়েকদিন থেকে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ায় বিপাকে পড়েছেন তাদের মতো কৃষি শ্রমিকরা।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় তিন হাজার নারী- পুরুষ। সকাল সাড়ে সাতটায় কাজে যোগ দিতে হয় তাদের। কুয়াশা এবং শীতকে উপেক্ষা করে কেউ অটোরিক্সা আবার কেউ বাইসাইকেলে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তারা। শীত এবং কুয়াশায় নাজেহাল হতে হয় তাদের।

পাথর ভাঙ্গা শ্রমিক লতিফ, আব্দুল আউয়াল জানান, এত ঠান্ডা তাদের কাজে যোগ দিতে এবং কাজ করতে ভীষন কষ্ট হয়। রাতেও গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট করতে হয় তাদের।

এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান জানান, শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সকাল ৯টায় পরিমাপ করা হয়েছে ৬ পয়েন্ট ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন পরিস্থিতি আগামী আরোও ৩ থেকে ৪দিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কুড়িগ্রামে | ঠাণ্ডায় | কাহিল | নদী | পাড়ের | মানুষ