আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

১ থেকে পিছিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা

১ থেকে পিছিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা

অমর একুশে গ্রন্থমেলা, ব্যাপকভাবে পরিচিত একুশে বইমেলা, স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোর অন্যতম। পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে এই মেলা বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে ও বর্ধমান হাউজ ঘিরে অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল বাংলা একাডেমি। কিন্তু দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করা হয়। তবে সরকারের দেয়া কিছু শর্ত সাপেক্ষ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে মেলার সময়সীমা কমিয়ে ১৪ দিন করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে কিছু শর্ত সাপেক্ষে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের কথা এরই মধ্যে মেলায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রকাশনী সংস্থাগুলোকে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতেও বলা হয়েছে চিঠিতে।

চিঠি পেয়েছেন এমন একটি প্রকাশনী সংস্থার কর্ণধার নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলা একাডেমি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি বইমেলা শুরু হবে এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে কথা বলতে তাদের ডাকা হয়েছে।

বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে, বইমেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাডেমির সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী, লেখক, প্রকাশক, বিক্রেতা, স্টলের কর্মচারীসহ সব কর্মীকে ভ্যাকসিন গ্রহণসহ বয়স্কদের প্রয়োজন মতো বুস্টার ডোজ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ভ্যাকসিন বুথ স্থাপনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশক, স্টলের সঙ্গে যুক্ত সবার নামের তালিকা এবং তাদের পূর্বের ভ্যাকসিন গ্রহণের সর্বশেষ তথ্য বাংলা একাডেমিতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারী কারণে গত বছর অমর একুশে বইমেলা দেড় মাস পিছিয়ে ১৮ মার্চ থেকে শুরু হয় এবং নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগে ১২ এপ্রিল তা শেষ হয়ে যায়। মহামারী পরিস্থিতি বিচেনায় গতবার ভিড় এড়াতে স্টলের সামনে ফাঁকা জায়গা রেখে প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুটের বিশাল বিস্তৃতি পেয়েছিল, যা ২০২০ সালের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইস্টিটিউটের সামনে দিয়ে নতুন করে একটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথ রাখা হয়েছিল।

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। পরের বছর মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। ১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা আর করা যায়নি। পরের বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’র। মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের এই বইমেলা এখন বাঙালির মননের মেলায় পরিণত হয়েছে।

অনন্যা চৈতী

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ১ | পিছিয়ে | ১৫ | ফেব্রুয়ারি | অমর | একুশে | বইমেলা