দেশের ৮টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট)। এ দিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১০ লাখ ৭ হাজার ২৪১ জন পরীক্ষার্থী। তবে বন্যার কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া তিন বোর্ডের সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে এইচএসসিতে বসতে আরও ১০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার থেকে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে একযোগে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। এ পরীক্ষা অংশ নিতে মোট ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। সারাদেশে মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৬৫৮টি এবং মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ১৬৯টি।
তবে বন্যার কারণে চট্টগ্রাম, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হয়। চারটি বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ায় আগামী ২৭ আগস্ট এ তিন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হবে। এ চারটি বিষয়ের পরীক্ষা কবে নেয়া হবে, সেই সময়সূচিও ঘোষণা করেছে তিন বোর্ড।
চলতি বছর একটি বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণসময়ে পরীক্ষা হবে। শুধুমাত্র আইসিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা বোর্ডগুলো এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে প্রশ্নফাঁস ও নকলমুক্ত সুষ্ঠু পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ড। এর মধ্যে অন্যতম কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা। গত ১৪ আগস্ট থেকে সারাদেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোচিং বন্ধ রাখা হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমে বলেন, ‘স্ব স্ব বোর্ড পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে। প্রশ্নফাঁস, পরীক্ষার কেন্দ্র ও কক্ষকেন্দ্রিক যেসব নির্দেশনা, সেগুলোও দায়িত্বপ্রাপ্তদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা দেবে।’
তিনি বলেন, যারা পরীক্ষা পেছানোর জন্য আন্দোলন করেছিল, তারাও বুঝেছে-যথাসময়ে পরীক্ষা হলে ভালো হবে। তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে এখন পড়ার টেবিলে। আশা করি, সবাই ভালো পরীক্ষা দেবে এবং ভালো ফল করবে।
পরীক্ষার হলে প্রবেশে যত বিধিনিষেধ-
গত কয়েক বছরের মতো এবারও এইচএসসির পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থী, পরিদর্শক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রবেশ এবং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু বিধিনিষেধ থাকছে। প্রশ্নফাঁস বা বিতর্ক এড়াতে কড়াকড়ি আরোপ করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডগুলো।
বিধিনিষেধের মধ্যে অন্যতম হলো-পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময় বা পরীক্ষা শুরুর পর (১০টা ৩০ মিনিটের বেশি নয়) প্রবেশ করেন, তাহলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্বের কারণ রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শকদেরও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। সেগুলোর বর্ণনা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্র সচিবকে প্রশ্নের সেট কোড জানিয়ে দেবে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রিক কোনো ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও ছবি তোলা যায় না-এমন মোবাইল ব্যবহার করতে হবে।
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেমন-পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।
এএম/