দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে চার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা থাকবেন।
আগামীকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় মতামত নেবে ইসি। বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা ‘যুগোপযোগী’ করার পাশাপাশি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের যন্ত্রপাতি আনা ও কর অব্যাহতির বিষয়ে আলোচনা হবে সভায়।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বুধবারের সভায় ভোট পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশিদের আবেদন সীমা, প্রয়োজনীয় কারিগরি সুযোগ-সুবিধা ও প্রাক নির্বাচনী একটি প্রতিনিধি দলের সুপারিশ পর্যালোচনা করে নীতিমালা হালনাগাদের বিষয় আলোচনা হবে। ইতো মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রাক অনুসন্ধানী প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অক্টোবরে আসবে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ দল।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ভোটকে সামনে রেখে বিদ্যমান বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা হালনাগাদ করার লক্ষ্যে বুধবার (২৩ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে। তাতে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন, এনবিআর, তথ্য ও সম্প্রচারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা থাকবেন।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন জানান, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষককে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচন পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ইতো মধ্যে ইইউ প্রতিনিধিরা কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে পর্যবেক্ষকদের কিছু যন্ত্রপাতি আনা এবং ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছে। সে ক্ষেত্রে তাদের সুবিধার্থে নীতিমালায় কী যুক্ত করা যায়, এনবিআর কী মতামত দেয় তা বিবেচনা করা হবে। এছাড়া, আবেদনের প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু করা যায়, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হবে।
২০১৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। সেই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল তারা।
একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এছাড়া, ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েল্থ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা এবং দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করে।
২০০৮ সালে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি, ২০০১ সালে ২২৫ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি, ১৯৯৬ সালে প্রায় ৪০ হাজার দেশি এবং ২৬৫ জন বিদেশি, ১৯৯১ সালে ৩০ হাজার দেশি এবং ৫৯ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।