বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মিশে এক সুদখোর পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তিনি এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে অপমান করবে এরকম কিছু সহ্য করা হবে না। বললেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের জাজিয়ারা গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের গৃহহীনদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং আদালতের যে বিচার হবে, সেই বিচারের রায় সকলকে মেনে নিতে হবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে এই মর্মে বিশ্বব্যাংক অর্থ বরাদ্ধ বন্ধ করে দিয়েছিল। সেদিন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু বানাবো এবং সেটি তিনি বানিয়ে দেখিয়েছেন। দুর্নীতি হয়েছে মর্মে বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রমাণিত হয়েছে যে পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো ধরনের দুর্নীতি হয় নাই।
ডক্টর ইউনুসকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মিশে এক সুদখোর পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তিনি এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। এদেশের আপামর জনসাধারণের রক্ত চুষে নিয়ে তিনি বিদেশে কোম্পানি বানিয়েছেন।
তিনি বলেন, একটি চক্র আছে তারা অন্যায় করলেও তাদের গায়ে টুকিও দেয়া যাবে না। যদি টুকি দেন তাহলে তারা ওই যে, বিদেশি বাবা-মা আছে তাদের কাছে গিয়ে লাফালাফি শুরু করে দেন। তাদেরকে কিছু টাকা ধরিয়ে দেন। আর তারা চিঠি লেখালেখি শুরু করে দেন।
ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আইন অনুযায়ী চলবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মামলা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। কয়েকটি কথা বলে রাখি ড. ইউনুসকে ১৯৯৬ সালে একটা মোবাইল ফোন কোম্পানি লাইসেন্স দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নাম গ্রামীণফোন। পরে তিনি নরওয়ের একটি কোম্পানির কাছে বেশিরভাগ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছিলেন। আর ৩২ পার্সেন্টের মতো শেয়ার তার কাছে রেখেছিলেন। বাংলাদেশের সকল মানুষ আয়কর দেয়। উনি আয়কর দেবেন না। যখন এটা নিয়ে উনাকে ধরা হয়েছে। উনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তবে একটি কথা বলতে চাই, তিনি হাইকোর্টের গেছেন। হাইকোর্টকে তিনি বলেছেন, মামলা ঠিক না মিথ্যা কথা। হাইকোর্ট বলেছেন, মামলা সঠিক আছে। পরে তিনি গেলেন আপিল বিভাগে। আপিল বিভাগে গিয়ে বলেছেন, মামলার ঠিক না। আপিল বিভাগ বলেছেন মামলা সঠিক। পরে তিনি আদালতের নির্দেশে পাওনা সাড়ে ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন।
উনার কোম্পানি গ্রামীণফোনের ৩২ পার্সেন্ট শেয়ারের মালিক তিনি। কোম্পানির নীতিমালা অনুযায়ী কোম্পানির লাভের পাঁচ ভাগ শ্রমিকদের দিতে হয়। তিনি তাদেরকে তা দেন নাই। শ্রমিকেরা তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। তিনি হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট গেছেন। আদালত বলেছেন মামলা চলবে। পরে তিনি বিশ্বের ১৬০টি দেশের মানুষকে দিয়ে চিঠি লিখেছেন আমাদের দেশের বিচার নাকি সঠিক হয় না।
মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর বিচার চাইলে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচার আইনে করতে পারতাম। দীর্ঘ ১৪ বছর সময় নিয়ে আমরা মামলা পরিচালনা করেছি।
২০০১ সালের থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির হাতে পায়ে ধরেছি, মামলা শেষ করার জন্য তারা শেষ করে নাই। বিচার পাই নাই। আবার যখন প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। সরকার গঠন করেন, তখন আমরা আইনের মাধ্যমে বিচার কাজ শেষ করে, আমরা তাদেরকে সাজা কার্যকর করেছি।
পরে আইনমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্পের ৫২টি পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি বিতরণ করেন। এসময় তিনি নিজের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট চান।