ভারতের সিকিম রাজ্যে ভারী বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যায় নিহত বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ২২ সেনাসহ কমপক্ষে ১০২ জন এখনো নিখোঁজ আছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) এনডিটিভির দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
রাজ্য সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬ জন আহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মোট ২২ হাজার মানুষ এই বন্যায় প্রভাবিত হয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, বুধবার ২৩ জন সেনা জওয়ান নিখোঁজ ছিলেন। তার মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ২২ জনের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে ৮০ জন বেসামরিক সাধারণ মানুষও নিখোঁজ।
রাজ্যে অতিবৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আকস্মিক বন্যায় সিকিমে ১৪টি সেতু ভেঙে গেছে। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে তিন হাজারের বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনী ও ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনীর (এনডিআরএফ) নেতৃত্বে সরকারের একাধিক সংস্থা বন্যাদুর্গত অঞ্চলে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিমানবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বুধবার ভোরে চুংথামে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। সেখানে লোনাক লেকের পানি প্রবল বেগে এসে মেশে তিস্তার সঙ্গে। তিস্তার চকিত বন্যায় ভেসে যায় আশপাশের বাড়িঘর, মানুষজন।
সিকিম সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, তিস্তা ব্যারাজ স্টেজ ৩-এ কর্মরত অন্তত ১৪ জন শ্রমিক টানেলে আটকে আছেন। নির্মীয়মান একটা অংশও ভেসে গেছে।
তিস্তার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গজলডোবা বাঁধ। তাই সেখান থেকে এখন প্রবল পরিমাণে পানি ছাড়া হচ্ছে। এতে জলপাইগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও বন্য়া পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পানি কমলেই বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে। সেচমন্ত্রী ও সেচসচিব বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ যাচ্ছেন।
জলপাইগুড়ির সেবক ব্রিজের মাত্র চারফুট নিচ দিয়ে তিস্তা বইছে। তাই এখানে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের পাশে তিস্তা রেল ব্রিজের নিচেও পানির স্তর অনেকটা বেড়ে গেছে। খুব ধীরে আসাম ও দিল্লির দিকে যাওয়া রাজধানী এক্সপ্রেস এই সেতুর উপর দিয়ে গেছে।
জলপাইগুড়িতে ২৮টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। তিস্তার দুই পার থেকে পাঁচ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।