আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সব আদালতে যৌন হয়রানি রোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ

সব আদালতে যৌন হয়রানি রোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ

দেশের সব জেলা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (নিজ প্রতিষ্ঠানে) যৌন হয়রানি রোধে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

আজ বুধবার (২৩ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি কৃষ্ণাদেবনাথের উপস্থিতিতে কমিটির দ্বিতীয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের প্রত্যেক জেলা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (নিজ প্রতিষ্ঠানে) যৌন হয়রানি রোধে কমিটি গঠন করার জন্য বলা হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, প্রাপ্ত অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের জন্যে জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে কমিটি গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

আদালতের রায়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকে এগিয়ে। কিন্তু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনে অবহেলার বিষয়টি হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেছিলেন আদালত।

প্রসঙ্গত, কর্মস্থল এবং শিক্ষাঙ্গনে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য দিক-নির্দেশনা চেয়ে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।

ওই রিট নিষ্পত্তি করে ২০০৯ সালের ১৫ মে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞাসহ যৌন হয়রানি রোধে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়ে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগকেন্দ্র গঠন এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ না করার কথাও বলা হয়।

রায়ে বলা হয়, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। এ অভিযোগ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে আর কমিটির প্রধান হবেন একজন নারী। এছাড়া কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সদস্য থাকবেন। কমিটি যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠাবেন। এরপর দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধের ধরন ও মাত্রা বুঝে বিচার বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

রায়ে আরও বলা হয়, কমিটি নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং পুলিশের কাছে অপরাধীকে না পাঠানো পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। যতদিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদে যৌন হয়রানি রোধে কোনো আইন প্রণয়ন করা না হয়, ততদিন বাংলাদেশ সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের দেওয়া এ নীতিমালা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আদালতে | যৌন | হয়রানি | রোধে | কমিটি | গঠনের | নির্দেশ