আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে: মোদি

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে: মোদি
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমাগত নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে। এমনকি গেলো ৯ বছরে উভয় দেশ একসঙ্গে যে কাজ করেছে, তা আগের কয়েক দশকেও হয়নি। বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার (১ নভেম্বর) আখাউড়া-আগরতলা রেলপথসহ ৩ প্রকল্প উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে মোদি এসব কথা বলেন। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘সীমান্তে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এটি কয়েক দশক ধরে ঝুঁলে ছিল। আমরা সমুদ্রসীমার বিরোধও সমাধান করেছি। গেলো ৯ বছরে ৩টি নতুন বাস পরিষেবা চালুর মাধ্যমে ঢাকা, শিলং, আগরতলা, গুয়াহাটি এবং কলকাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।’ ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গেলো ৯ বছরে ৩টি নতুন ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে পার্সেল এবং কন্টেইনার ট্রেনগুলোও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলছে। গঙ্গা বিলাস নামে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী চালু করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটনও চাঙ্গা করা হয়েছে।’ নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘গেলো ৯ বছরে আমাদের (বাংলাদেশ ও ভারতের) অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য তিনগুণ বেড়েছে। আজ আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের উদ্বোধন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম রেল সংযোগ।’ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আখাউড়া-আগরতলা রেলপথসহ ৩টি প্রকল্প ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর নয়াদিল্লি থেকে যুক্ত হন নরেন্দ্র মোদি। প্রকল্প তিনটি হলো : আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিট। নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘আমরা যে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ (সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সবার উন্নয়ন) নীতিতে বিশ্বাস করি, এটি আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের জন্যও বিবেচনা করি। আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে গর্বিত। গত ৯ বছরে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য প্রদান করা হয়েছে।’ মোদি বলেন, ‘আমাদের অর্জনের তালিকা অনেক দীর্ঘ... আজ যে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে আমরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আজ সেগুলো উদ্বোধন করার সুযোগও পেয়েছি। আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার সাফল্যের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ এসব প্রকল্পের উদ্বোধনের আগে মঙ্গলবার ভারত সরকার জানায়, এই প্রকল্পগুলো ভারতের সহায়তার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে, যা এই অঞ্চলে সংযোগ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করবে। আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ প্রকল্পটি ভারত সরকারের ৩৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকার অনুদান সহায়তার আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে। রেলপথটি চালুর ফলে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। জানা গেছে, উদ্বোধনের পর প্রথমদিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরবর্তী সময়ে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে। খুলনা-মোংলা বন্দর রেল লাইন প্রকল্পটি ভারত সরকারের ছাড়ের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ৩৮৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলা ব্রডগেজ রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভারতীয় ঋণ সহায়তার আওতায় বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের রামপালে অবস্থিত একটি ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট (২x৬৬০) সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বাংলাদেশভারত | সম্পর্ক | ক্রমাগত | উচ্চতায় | পৌঁছাচ্ছে | মোদি