আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

৩ বছর পর শিশু সন্তান বুঝে পেলেন এক ভারতীয় মা

৩ বছর পর শিশু সন্তান বুঝে পেলেন এক ভারতীয় মা
ভারতীয় নারী সাদিকা সাঈদ নিজ শিশু সন্তানকে ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন ২০২১ সালে। তা জানতে পেরে সন্তান নিয়ে দেশ ছাড়েন স্বামী শাহিনুর টি আই এম নবী। অস্ট্রেলিয়া গিয়ে আর দেশমুখি হননি তিনি। সম্প্রতি দেশে ফিরে সেই শিশু সন্তানের বাবা জামিন নিতে গেলে আপিল বিভাগ শিশু সন্তানটিকে সর্বোচ্চ আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। সোমবার (৬ নভেম্বর) সর্বোচ্চ আদালত দীর্ঘ ৩ বছর পর ভারতীয় নারীর কাছে সন্তানটিকে ফেরত দেন। বাবাকে দেয়া হয় জামিন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ এ রায় দেন। সন্তানের জন্য বাবা-মা দুজনই সমান গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায়, সপ্তাহে দুদিন বাবা সন্তানকে দেখতে পারবেন বলেও রায়ে বলা হয়। সেই সঙ্গে বাবার পাসপোর্ট আপিল বিভাগে জমা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভারতীয় নারীর আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, এই দু’বছর অসহায় এই মায়ের কষ্ট আমরা দেখেছি। ওর মা অসুস্থ, নানী মারা গেছেন তারপরেও সে ভারতে যেতে পারেনি। অনেক কষ্ট করেছে, আপনারা ওর জন্যে দোয়া করবেন। রায় পেয়ে ভারতীয় নারী সাদিকা সাঈদ বলেন, আপিল বিভাগকে কোটি কোটি ধন্যবাদ আমার সন্তানকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেবার জন্য। আমি আমার সন্তানকে গেলো ২ বছর চোখের দেখাটাও দেখতে পারিনি। সন্তানের জন্য ভারতীয় নাগরিকত্ব ছাড়তে চান তিনি। সাদিকা সাঈদ বলেন, আমার বাচ্চা বাংলাদেশি। আমি ওর জন্যে এ দেশের নাগরিকত্ব নিতে চাই এবং এখানেই থাকতে চাই। জানা যায়, ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে অন্ধপ্রদেশের হায়দ্রাবাদের সাদিকা শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন রাজধানীর এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনুর টি আই এম নবী। ২০১৭ সালে হায়দ্রাবাদে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালেশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। ২০১৮ সালে তাদের ঘরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এক পর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরও করেন তার স্বামী। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়-স্বজনরা জানতে পারেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও সমাধান হয়নি। পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান। পরে ২০২১ সালের ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশু সন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হেবিয়াস কর্পাস রিট করে ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (ফ্লাড) পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী। ভারতীয় মায়ের পক্ষের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পরপরই বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনুর টি আই এম নবী ভারতীয় নাগরিককে ডিভোর্স দেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ৩ | বছর | শিশু | সন্তান | বুঝে | পেলেন | এক | ভারতীয় | মা