অতীতের মতো আরও একটি একতরফা ভুয়া নির্বাচনের নামে তামাশা করতে বেপরোয়া এবং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে আওয়ামী সরকার।৫৭ সেকেন্ডে নৌকা মার্কায় ৪৩ সিল মারার নির্বাচনের জন্য সরকার এখন বেসামাল। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনিএসব বলেন।
রিজভী বলেন, যুদ্ধকালীন নিস্তব্ধ আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যে জীবন-যাপন করছে সাধারণ মানুষ। ভিন্নমত প্রকাশ, বহুমাত্রিকতা, গণতন্ত্রের মৌল বিষয়গুলো চিরতরে অস্তাচলে যাত্রার অশনি সংকেত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সাংবিধানিক ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের অভাবনীয় অংশগ্রহণ দেখে ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে সরকার।
তিনি বলেন, গোটা দেশকে রীতিমত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে নিক্ষেপ করা হয়েছে। জনগণ এখন একাত্তর সালের মতো মুক্তিযুদ্ধের ভয়ঙ্কর পরিবেশে বসবাস করছে। পুলিশের অতি দলবাজরা এখন আওয়ামী লীগ লিমিটেড কোম্পানির কর্মচারীতে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দলদাস কর্মকর্তা-সদস্যরা পাক হানাদার বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে।আর আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভূমিকা এখন রাজাকারের। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা হানাদারবাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর চিনিয়ে দিতো। তাদের লুটপাট তান্ডবে সহযোগিতা করতো। আর বর্তমানে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাজাকারদের মতো র্যাব-পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত আওয়ামী পুলিশ লীগকে গণতন্ত্রকামী মানুষের বাড়িঘর চিনিয়ে দিচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আওয়ামী অবৈধ সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আগামীকাল রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক রাজপথ- রেলপথ-নৌ-পথে অবরোধ কর্মসুচি সফল করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের এই গনতান্ত্রিক কর্মসূচী সম্পূর্ন শান্তিপূর্ণ।
তিনি বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যানবাহনে আগুন দিচ্ছে-তাণ্ডব চালাচ্ছে। মানবিক মর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাইলে, পরিবারকে বাঁচাতে চাইলে, দেশ বাঁচাতে চাইলে, বিরোধী দলের ডাকা প্রতিটি কর্মসূচি, আমাদেরকে যে কোনো মূল্যে সফল করতে হবে।
রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ৩১৫ জনের বেশি নেতাকর্মী। মোট ১২টি মামলা আসামি ১৩৭০ জনের বেশি নেতাকর্মী (এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত)। আহত হয়েছেন ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আরও জানান, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই হতে অদ্যাবধি বিএনপির ১৩ হাজার ৩৮৬ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়া মামলা দেওয়া হয়েছে ৬১৩টি যাতে আসামি করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৪৪৩ জনকে। এছাড়াও মোট আহত ৫ হাজার ৯৯৭ এবং নিহত হয়েছেন একজন সাংবাদিকসহ ১২ জন।