আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিন ইস্যুতে লন্ডনে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ,আটক ১২০

ফিলিস্তিন ইস্যুতে লন্ডনে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ,আটক ১২০
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবন্ধের দাবিতে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে বড় ধরণের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার(১১ নভেম্বর) এই বিক্ষোভে তিন লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেন। তবে এই বিক্ষোভ দমাতে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ হয়েছে।  ফিলিস্তিনের বিপক্ষে এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১২০  জনকে আটক করেছে লন্ডনের পুলিশ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল মার্চ ফর প্যালেস্টাইন নামে এ বিক্ষোভ শুরু হয় স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ১২টায়। বিক্ষোভে অনেককে ‘নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন হবে মুক্ত’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’, ‘গণহত্যা বন্ধ করো’, ‘গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করো’— লেখা ব্যনার দেখা যায় বিক্ষোভে। সেন্ট্রাল লন্ডনে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর পাল্টা এ বিক্ষোভ শুরু হয়।পাল্টা বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশটির কট্টর ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্য বলে জানা গেছে।  পাল্টা বিক্ষোভে নামা ছোট ছোট একাধিক দলের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। লন্ডন পুলিশ জানায়, পাল্টা বিক্ষোভ করতে সেন্ট্রাল লন্ডনের বিভিন্ন সড়কে কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে দেখা গেছে। কয়েকটি স্থানে এসব বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। দুই পক্ষের বিক্ষোভকারীর মধ্যে যাতে সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে এ জন্য পাল্টা বিক্ষোভ করতে নামা ১২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। লন্ডন পুলিশ জানায়, বিক্ষোভে তিন লাখের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। তবে আয়োজকদের দাবি, ফিলিস্তিনের সমর্থনে ৮ লাখের বেশি লোক বিক্ষোভে যোগ দেন। এদিকে,সংঘর্ষের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। একই সঙ্গে ‘হামাসের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে’ যারা বিশাল এই বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ‘ইহুদিবিদ্বেষী স্লোগান এবং হামাসপন্থী বিভিন্ন ব্যানার ও পোশাক পরেছিলেন’ তাদের আক্রমণ করেও বক্তব্য দিয়েছেন সুনাক। এক বিবৃতিতে ঋষি সুনাক বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সব ধরনের অপরাধমূলক তৎপরতা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। গত বুধবার লন্ডন পুলিশ কমিশনারকে আমি এ কথাই বলেছি। এর জন্যই তাদের (পুলিশ বাহিনী) রাখা হয়েছে এবং (প্রধানমন্ত্রী হিসেবে) আমিও সেটাই তাদের কাছে চাই।’ ফিলিস্তিনের গাজায় অব্যাহত হামলার প্রতিবাদ ও যুদ্ধবিরতির দাবিতে একাধিকবার লন্ডনে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে শনিবার হওয়া বিক্ষোভ ছিল সবচেয়ে বড়। এ বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে লন্ডনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিশেষ করে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান বিক্ষোভকে ‘বিদ্বেষমূলক মিছিল’ বলার পর উত্তেজনা বাড়ে। প্রসঙ্গত,পবিত্র আল আকসা মসজিদের অপবিত্রতা এবং কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে গত ৭ অক্টোবর স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে তারা নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গাজায় অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। শুধু তাই নয়, গত বছর থেকে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের শহরগুলোতে সামরিক অভিযান দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ভূখন্ডে  ইসরায়েলের  অবৈধ বসতি বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে রকেট হামলা চালায় হামাস। আর এর জবাবে  হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।তাদের বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ফিলিস্তিন | ইস্যুতে | লন্ডনে | পাল্টাপাল্টি | বিক্ষোভআটক | ১২০