জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে নাশকতার প্রয়াস বেড়েছে। কয়েকটি এলাকায় ককটেল ছুড়ে মেরেছে, তবে পুলিশি তৎপরতার কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঢাকার নিরাপত্তার প্রচেষ্টা সুদৃঢ় রাখতে আমরা বদ্ধ পরিকর। আগামী দিনগুলোতে এ ধরনের নাশকতার চেষ্টা করলে ডিএমপি পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে নিরাপত্তা প্রদান করবে। বললেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা বেশ কিছু জায়গায় বিস্ফোরক জাতীয় বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহারের প্রচেষ্টা লক্ষ্য করেছি। গতকাল ভাষানটেকে একটি নির্মাণাধীন ভবনে বিস্ফোরক সামগ্রীসহ জমায়েত হওয়া ৮ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে যত পরিমাণ নাশকতা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে, সেসব ব্যবহার করতে পারলে নাশকতার ব্যাপকতা আরও বাড়তে পারতো।
তিনি বলেন, যারা জোগাড় করতে চায় তারা ঝুঁকি নিয়েও জোগাড় করে। এরপরেও আমরা লুজ পেট্রোল বিক্রির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। বিভিন্ন কেমিকেল যেগুলো গার্মেন্টসে ব্যবহার করা হয়, দেখা গেছে তারা সেগুলো কোনোভাবে সংগ্রহ করে বিভিন্ন সামগ্রী মিশিয়ে বিস্ফোরক তৈরি করে।
অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ঢাকায় ৪-৫ হাজার বাস চলাচল করে, লাখ লাখ যানবাহন রয়েছে। এর মধ্যে কিছু যানবাহন যত্রতত্র পার্কিং করা থাকে। অরক্ষিতভাবে অনেক জায়গায় যে গাড়িগুলো থাকে, নাশকতাকারীরা এ সুযোগটা নেয়। তবে নাশকতা যেটি করেছে, সেটা তাদের প্রচেষ্টা বা উদ্যোগের চেয়ে কম।
তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান থেকে প্রচেষ্টার ঘাটতি নেই। তারপরেও বাস্তবতা দেখেন। ঢাকায় যে পরিমাণ মানুষ সে পরিমাণ জায়গা নেই। পর্যাপ্ত পার্কিং সিস্টেম নেই স্বীকার করতেই হবে। বড় টার্মিনালে অনেক বাস থাকেই। তারপরেও সাড়ে চার হাজার ৫ হাজার বাস চলাচল করে, যেগুলোর জন্য পর্যাপ্ত পার্কিং নেই। তবে আমাদের প্রচেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ককটেল বিস্ফোরণ এবং বিস্ফোরক বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বুধবার রাতে রাজধানীর ভাষানটেক এলাকা থেকে ৮ জন, শাহআলী থেকে ১ জন ও শাহবাগ এলাকা থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মাহফুজ হোসেন মুনা (২০), মো. ইয়াছিন (১৯), মো. ফরহাদ (১৯), মো. মাহি (১৮), মো. আউলাদ হোসেন (১৮), মো. নাছিম (১৮), মো. আমজাদ আলী হোসেন (১৮), মো. তানভীর হোসেন (১৮), মো. নিজাম উদ্দিন জসিম, নূর মোহাম্মদ শিকদার (২৩), মোহাম্মদ বখতিয়ার চৌধুরী ওরফে শাহীন (২৪) ও মো. রুবেল (২০)।
এদের মধ্যে নিজাম উদ্দিন জসিম রূপনগর থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গ্রেপ্তার বাকিরাও অবরোধের কর্মসূচির সমর্থক, তবে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।