আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় লাখো মুসল্লির

বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় লাখো মুসল্লির

প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে দেশের অন্যতম বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলো কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। করোনা মহামারির কারণে গেলো দুই বছর শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত বন্ধ ছিল। তাই এবার শোলাকিয়ায় ঈদগাহে মুসল্লি সমাগম ছিল অনেক বেশি। ১৯৫ তম ঈদ জামাতে এবার ইমামতি করেছেন শহরের হয়বতনগর মসজিদের ইমাম শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ।

আজ মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল ৯টা থেকেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই ঈদের জামাত শুরু হয় সকাল ১০টায়। এর আগেই ভোর থেকে দলে দলে মুসল্লি আসতে থাকেন ঈদগাহে। ১০টার আগেই কানায় কানায় ভরে যায় শোলাকিয়ার বিশাল মাঠ।

জেলা প্রশাসক মো. শামীম আলম, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজসহ বিশিষ্টজনেরা এ মাঠে নামাজ পড়েন।

ঈদকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। ঈদগাহে প্রবেশের আগেই মুসল্লিদের কমপক্ষে চারবার পুলিশের নিরাপত্তা তল্লাশির মুখে পড়তে হয়। মেটাল ডিটেক্টরে দেহ তল্লাশির পর চূড়ান্তভাবে আর্চয়ের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে হয় মাঠে।

মুসল্লিদের সঙ্গে মোবাইল ফোন ও ছাতাও নিতে দেয়া হয়নি। শুধুমাত্র জায়নামাজ আর টুপি নিয়ে প্রবেশ করতে হয় মুসল্লিদের।

কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে শোলাকিয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে শোলাকিয়া ঈদগাহের অবস্থান। প্রায় সাড়ে ৬ একর আয়তনের ঈদগাহে মাঠের ভেতরে স্বাভাবিক অবস্থায় ১ লাখ ৬৫ হাজার মুসল্লির ধারণক্ষমতা থাকলেও প্রতি বছর  এখানে ঈদের নামাজে অংশ নেন কয়েক লাখ মুসল্লি।

মাঠের ভেতরেই দুই লাখের বেশি মুসল্লি নামাজ পড়েন। আর মাঠের বাইরে রাস্তা-ঘাট ও পেছনে অংশ নেন আরও দেড় লাখের মতো মানুষ। দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে শোলাকিয়া ও এর আশপাশ।

মাঠে প্রবেশের আগে সবাইকে পুলিশের চারটি নিরাপত্তা চৌকি পার হতে হয়েছে। সিসি ক্যামেরায় মনিটর করা হয়েছে মাঠের ভেতর ও চারপাশ। মাঠের চারপাশে ছিল ৬টি ওয়াচ টাওয়ার। চারটি শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা মিনটর করে চারপাশ।

উল্লেখ্য, বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম বীর ঈশাখাঁর ১৬তম বংশধর দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান ১৮৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য জমি ওয়াক্ফ করেন। তারও দু’শো বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে ওই ওয়াক্ফ দলিলে উল্লেখ আছে। লাখো মুসল্লির সঙ্গে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ পড়লে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়- এমন ধারণা থেকে প্রতি বছর এখানে দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মুসল্লির ঢল নামে। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়ে আসছেন অনেকে।

১৮২৮ সালে শোলাকিয়া মাঠে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া‘। যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বৃষ্টিকে | উপেক্ষা | করেই | শোলাকিয়ায় | নামাজ | আদায় | লাখো | মুসল্লির